সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে বিষাক্ত করে তুলেছে একশ্রেণির মৎস্যজীবী। বনের ছোট ছোট খালে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করায় ধ্বংস হচ্ছে শত শত প্রজাতির জলজপ্রাণি। ধারণ করা হচ্ছে খালে বিষাক্ত পানি খেয়ে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা পড়ছে একের পর এক বনের রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মায়াবি চিত্রল হরিণসহ বন্যপ্রাণিরাও। সোমবারও (১২ ফ্রেব্রুয়ারি) একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এনিয়ে গত চার বছরে শুধু পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জেই পাঁচটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ট্যুরিস্টদের অসচেতনতায় প্লাস্টিক বর্জ্যেও দূষণ হচ্ছে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবশে। এব্যাপারে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুরিস্টদের আরো সতর্ক হতে হবে। পাশপাশি জেলে নামধারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। না হয় অচিরেই অস্তিত্ব হারাবে অপার সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি আমাদের সুন্দরবন।

বাগেরহাটের শরণখোলা ও বাগেরহাট প্রেসক্লাবের আয়োজনে ১৪ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সুন্দরবন দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এমন উদ্বেগেরে কথা তলে ধরেন বক্তারা। ২০০১ সাল থেকে প্রতিবছরের সুন্দরবন সন্নিহিত জনপদে বিশ্ব ভালবাসা দিবসের দিনটিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ সিসেবে পালন করে আসছে। সুন্দরবন দিবসে এদিন সকাল ১০টায় শরণখোলা ও বাগেরহাট প্রেসক্লাব চত্বর থেকে একটি র‌্যালি বের হয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

শরণখোলায় র‌্যালি শেষে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলনায়তনে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রিয় গোপাল বিশ্বাস।

অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শরণখোলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আলী ও সাবেক সভাপতি বাবুল দাস। রূপান্তরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন মিরু, মিজানুর রাকিব, সুন্দরবনের ট্যুর অপারেটর রাসেল আহমেদ, পরিবেশ কর্মী সোলায়মা ফরাজী প্রমুখ।

বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে সুন্দরবন দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মো. ফকরুল হাসান। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মীর জায়েসী আশরাফী জেমস, সাবেক সভাপতি মো. শাহ আলম টুকু, শেখ আহসানুল করিম, সহ সাধারন সম্পাদক শেখ আজমল হোসেন, সাবেক সাধানর সম্পাদক আলী আকবর টুটুল, সাংবাদিক শেখ আসাদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সুন্দরবন সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত থেকে আমাদের উপকূলবাসীকে রক্ষা করে। মা যেমন নিজে ক্ষতবিক্ষত হয়েও তার সন্তানকে বাঁচায়, তেমনি যে কোনো বিপদে সুন্দরবন সেই মায়ের মতোই আমাদের আগলে রাখে। এই সুন্দরবনকে রক্ষায় সরকারের আরো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। পাশপাশি ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষনা করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান বক্তারা।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪)