নড়াইলে ডাঃ শশাঙ্কের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন, কুশপুত্তলিকা দাহ
নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শশাঙ্ক চন্দ্রের অপসারণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে কালিয়ার সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী, সরকারি টাকা আত্মসাৎ, চাঁদাবাজী, ও অসদাচরনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান কুসুম, কালিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র আসলাম ভূইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান বীর মুক্তিযোদ্ধা খান লুতফুর রহমান, মিডিয়া কর্মী মো. বাবর আলী, ছাত্রলীগ নেতা ইয়াসিন জনি প্রমুখ।
মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে এই দেশকে শত্রুদের হাত থেকে মুক্ত করেছি। দেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছি। কিন্তু ডাঃ শশাঙ্কের অত্যাচারে আজ আমরা হাসপাতালে গেলে ঠিক মত চিকিৎসা পাই না। মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা না দিয়ে বের করে দেওয়ার মত ঘটনাও তিনি ঘটিয়েছেন। এছাড়া তার অফিসে কোন প্রয়োজনে গেলে অফিসে ঢুকতে দেয় না। এই ডাঃ শশাঙ্ক কালিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে একটা দুর্নীতির আঁকড়ায় পরিণত করেছে। কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবার খাত তার অত্যাচারে কালিয়া উপজেলার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট দাবী জানান এই দুর্নীতিবাজ ডাঃ শশাঙ্ককে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আর দেখতে চাই না। অন্যন্য বক্তারাও চাঁদাবাজ উল্লেখ করে ডাঃ শশাঙ্কের অপসারণের দাবী জানান।
বক্তব্য শেষে মানববন্ধন শেষে শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।
এ বিষয়ে ডাঃ শশাঙ্কের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি কালিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যখন আসি তখন হাসপাতালে কোন ঔষধ মজুদ ছিল না। রোগীরা ঠিকমত ঔষধ পেত না। আমি এখানে আসার পর থেকে হাসপাতালে পর্যাপ্ত ঔষধ থাকে এবং রোগীরা ঠিক মত ঔষধ পায়। তিনি আরও বলেন ভাল কাজ করেও যদি মানুষ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন সেক্ষেত্রে আমার কিছুই বলার নাই। আমার ভাল কাজগুলো আমি করে যাওয়ার চেষ্টা করবো। তিনি আরও বলেন, উর্ধতন কর্মকর্তা রয়েছেন উনারা যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেভাবেই সব কিছু হবে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ অফিস সময়ের পর সরকারি গাড়িতে নারী মেডিকেল অফিসারকে নিয়ে ভ্রমণে বেরিয়ে শোকজের মুখে পড়েন। সিভিল সার্জন ডা. সাজেদা বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. শশাঙ্ককে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা সিভিল সার্জন এ তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন।
চিঠিতে বলা হয়েছিল, গত ১৭ জানুয়ারি অফিস সময়ের পর সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে এক নারী মেডিকেল অফিসারকে নিয়ে কালিয়া উপজেলার বারইপাড়া ঘাটে ব্যক্তিগত কাজে যান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ। সেখানে গাড়ি থামিয়ে এক ব্যক্তি নারী মেডিকেল অফিসারকে লাঞ্ছিত করেন। অফিস সময়ের পর একজন নারী মেডিকেল অফিসারসহ এমন ভ্রমণে যাওয়া শোভনীয় নয় ও অপ্রীতিকর উল্লেখ করেন।
চিঠিতে অভিযুক্ত চিকিৎসককে উদ্দেশ্য করে আরও বলা হয়েছিল, এ ধরনের ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। একজন দায়িত্ববান কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরনের আচরণ কাম্য নয়। পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয় ওই চিঠিতে।
(আরএম/এএস/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪)