সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অভিযোগ ছাড়াই ৩ ঘণ্টার মধ্যে ছিনতাই হওয়া বিভাটেক ও ব্যাটারি উদ্ধার করলো ভৈরব থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম। আটককৃতরা হলো বিভাটেক চালক শহরের কালিপুর এলাকার মো. হুমায়ুন কবিরের ছেলে শাহ আলম ও উপজেলা কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আতকা পাড়া এলাকার মৃত সোনা মিয়ার ছেলে কবির মিয়া।

থানা পুলিশ জানায়, ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায় একজন চালক শিমুলকান্দি ইউনিয়নের চাঁনপুর কোদালকাটি ব্রীজের নিচে পা বাধা অবস্থায় রয়েছে। এসময় মজিদ মিয়ার নামের এক ব্যক্তি তার সহযোগীদের নিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে মজিদ মিয়া তার ফেসবুক আইডিতে লাইভ ভিডিও করে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাইকে জানান দেয়। পরে বিষয়টি যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনাটি দেখে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ নিজেই গাড়ির মালিকের বাড়িতে গিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করে। ওসি জানতে পারে বিভাটেকটি পাওয়া যায় তবে ব্যটারিগুলো পাওয়া যায়নি। গাড়ির চালকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাকে দেখে সন্দেহ হয়। পরে বিভাটেক চালককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তার নিজেরই সম্পৃক্ততা উদঘাটন করে উপজেলা কালিকাপ্রসাদ থেকে ব্যাটারি উদ্ধারসহ কবির মিয়া নামে একজনকে আটক করে।

এ বিষয়ে বিভাটেক মালিক বাবু মিয়া বলেন, আমি ড্রাইভারের মাধ্যমে বিভাটেক পেয়েছি। কিন্তু ব্যাটারি পায়নি। ড্রাইভার শাহ আলম নিজেই আমাকে সাথে নিয়ে গিয়ে রাত ১২টায় বিভাটেকটি উদ্ধার করে দেয়। সেই পরে ব্যাটারি জরিমানা দিবে বলে আমাকে জানায়। শাহ আলম এর ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। ভৈরব থানা ওসি স্যার নিজের থেকেই আমার ব্যাটারি উদ্ধার করেছেন ও ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করেছেন।

এ বিষয়ে আটক কবির মিয়া বলেন, শাহ আলম ব্যাটারিগুলো তার বড় ভাইয়ের বলে জানিয়েছে। সে নাকি বিদেশ চলে যাবে তাই আমি ব্যাটারিগুলো কিনেছি।

চালক শাহ-আলম জানান, আমার শিশু বাচ্চাটি অসুস্থ ও আমি কিছু টাকা ঋণগ্রস্ত তাই নাটক সাজিয়ে ব্যাটারি বিক্রি করে দিয়েছি। ভেবে ছিলাম মালিককে কিস্তিতে ব্যাটারি কিনে দিয়ে দিবো।

এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, হঠাৎ রাতে ফেসবুকে চাঁনপুর এলাকায় একটি বিভাটেক ছিনতাইয়ের বিষয় দেখতে পায়। পরে বিষয়টি আমি ব্যক্তিগত ভাবে আমলে নেয়। ভৈরবের পুলিশে ভাবক্ষুন্ন হচ্ছে ভেবে আমি নিজ দায়িত্বে বিষয়টি তদন্ত শুরু করি। পরে বিভাটেক মালিকের বাড়িতে গিয়ে বিভাটেক পাওয়ার বিষয়টি জানতে পারি। কিন্তু ব্যাটারির বিষয়টি শুনে আরো গুরুত্ব দেই। রাতেই ড্রাইভার শাহ আলমকে থানায় নিয়ে আসি তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি সেই মূল হুতা। তার পা বাধা অবস্থাটি সম্পূর্ণ নাটক। তারই দেয়া তথ্য মতে ব্যাটারি বিক্রির টাকা ও ব্যাটারি উদ্ধারসহ কবির মিয়া নামের একজনকে আটক করেছি। তাদের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

(এসএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪)