ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : এলাকায় এখন তাদের সেই সরব উপস্থিতি চোখে পড়ে না, 'ব্যস্ততা প্রদর্শনের' সেই হম্বিতম্বিও হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়ার উপক্রম। 'রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান' ঘটেছে দীর্ঘদিনের নিপীড়িত, নিগৃহীতসহ সর্বস্তরের সাংবাদিকদের  ব্যাক্তিগত ও সাংগঠনিক ঐক্যের সূচনার মাধ্যমে। এমন শুভ তৎপরতার মধ্য দিয়ে প্রেসক্লাবের নেতৃত্বের পরিবর্তন এসেছে, এমন মহাকাব্যিক উত্থান একমাত্র স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির দ্বারাই এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব। সর্বমহল প্রেসক্লাবের এই নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে।

নীলফামারীর বৃহত্তর সাংবাদিক সমাজ যখন বাঁধভাঙা আনন্দে ভাসছে, ঠিক সে সময় মনে কোন আনন্দ নেই সাংবাদিকদের নিগ্রহকারীদের, ছলে বলে কৌশলে নেতৃত্ব হাতে নিয়েই সাংবাদিকদের ওপর দমন পীড়ন চালাতে চালাতে সময় শেষ!

অত্যন্ত আবেগঘন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে প্রেসক্লাবের নেতৃত্বের পালাবদল ঘটেছে। এমন ইস্পাত-দৃঢ় ঐক্য স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির দ্বারাই রচনা করা সম্ভব। তাহলে কি এতোদিন প্রেসক্লাবে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি নেতৃত্বে ছিল না। তাদের চিন্তাভাবনা, তাদের পদক্ষেপ, তাদের এই সময়ের কর্মকান্ড একটু খতিয়ে দেখলেই দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে তারা কোন পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে।

১৭ ফেব্রুয়ারি প্রেসক্লাবের নির্বাচনে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির এক মহাকাব্যিক উত্থান ঘটেছে। আত্মমর্যাদা নিয়ে সাংবাদিকরা সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচবার এক আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছে এই নির্বাচন।

এমন ঐক্য কোন ভাবেই স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষের দ্বারা সূচনা করা সম্ভব ছিল না। ১০/৫টা সাংবাদিক একাট্টা করে কিভাবে ফয়দা লোটা যায়, এই মতলব ছাড়া আর এতোদিন আর কিইবা করেছে?

নিয়মতান্ত্রিক ভাবে এমন শান্তিপূর্ণ সমাধান স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির দ্বারাই সম্ভব। অপরপক্ষে নিতান্তই ছল চাতুরী ছাড়া জনমতামতকে তারা শুধু উপেক্ষাই করে না, তারা ছাড়া সবাই তাদের কাছে বিদ্রুপের পাত্র।

নীলফামারী প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সিয়াম-আলম পরিষদ জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি নীলফামারী প্রেসক্লাব নির্বাচনে সন্দেহাতিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের অভূতপূর্ব বিজয় অর্জন হয়েছে। নির্বাচনের পূর্বে সিয়াম-আলম নেতৃত্বাধীন পরিষদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করলো জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মাধ্যমে। এবার প্রেসক্লাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী দেশ রত্ন শেখ হাসিনার ছবি উত্তোলনের পালা, প্রেসক্লাবে ছবি উত্তোলনের মাধ্যমে প্রেসক্লাব তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে, এমনটা আশা করা যেতেই পারে।

প্রেসক্লাবের নির্বাচন নিয়ে একটি আর্টিকেল আজকের ২৪ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার দৈনিক বাংলা ৭১ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। যার শিরোনাম 'প্রেসক্লাবের নির্বাচনের মাধ্যমে যে বার্তা পেল নীলফামারীর সাংবাদিক মহল'। এখানে খুব সচেতন ভাবেই 'বার্তা পেল' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। নীলফামারীতে কর্মরত সাংবাদিকদের সংখ্যা দুই শতাধিক, এর মধ্যে শুধুমাত্র ৩৯ জন ভোটার ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পেয়েছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংবাদিক এই নির্বাচনে শুধু মাত্র দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। তবে, ১৭ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের একটা সৌন্দর্য হলো এটি শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকদের একটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে এই নির্বাচন। প্রেসক্লাবের নেতৃত্বের পালাবদলের আকাঙ্খা থেকেই যে যার অবন্থান থেকে নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছেন। যত দ্রুত এই আপদ বিদায় নেয়, এই পরির্তনের আকাঙ্খা থেকে আবার এটিকে ইস্যু করে এই পরিবর্তনটা বাঁধাগ্রস্থ হোক এমনটা না চাওয়ার কারণে নির্বাচনের ত্রুটি বিচ্যুত্তি নিয়ে কেউ কোন আপত্তি তোলেনি। যার ফলশ্রুতিতে নীলফামারী প্রেসক্লাব নির্বাচনে এক মহাকাব্যিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে৷

১৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের গুরুত্ব, বৈশিষ্ট্য, গতি-প্রকৃতি ইত্যাদি নিয়ে একটা সম্যক ধারণা একজন গণমাধ্যম কর্মীর জানা থাকা দরকার।

এই নির্বাচনটা হয়েছে সংগঠিত সংখ্যালঘুদের সিদ্ধান্ত অসংগঠিত সংখ্যাগরিষ্ঠ্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার নামান্তর। কেননা, এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নীলফামারীর সিংহভাগ সাংবাদিক অংশগ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বিগত নেতৃত্ব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিপ্রায়ে নিজেদের অনুগতদের প্রেসক্লাবের সদস্য করেছে। এইসব কারণে আজকের আর্টিকেলে 'বার্তা দিল' না দিয়ে দেওয়া হয়েছে 'বার্তা পেল' শব্দটি।

সর্বস্তরের মানুষের অভিনন্দনে সিক্ত হচ্ছে নীলফামারী প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটি। ১৭ ফেব্রুয়ারি নীলফামারী প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে বিজয়ী সিয়াম-আলম নেতৃত্বাধীন কমিটিকে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অভিনন্দন, শুভেচ্ছায় সিক্ত করছেন।

নীলফামারী প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক এম আর চৌধুরী রাজু জানিয়েছেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রেসক্লাবের নির্বাচনের পর নবনির্বাচিত কমিটিকে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছে, এই অভিনন্দন জানানো অব্যাহত আছে। জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অভিনন্দন জ্ঞাপন অব্যাহত আছে।

(ওআরকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪)