মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : গত বছরের ৬ ডিসেম্বর দুপুরে শ্রীমঙ্গলে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন শেষে বের হবার পর এক নারী ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। এর পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১৮ তারিখে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় একটি এবং চলতি মাসের ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে একই কায়দায় শ্রীমঙ্গলে আরেকটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় দু’জন চা শ্রমিকের পেনশনের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় আলাদা আলাদা মামলাও হয়। ওই ঘটনা গুলোর পর তৎপর হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশের অভিযানে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রযুক্তির সহায়তায় ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় চার সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব বিষয় নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান পিপিএম (বার)। সংবাদ সম্মেলন শেষে গ্রেফতার চার ছিনতাইকারীকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে পুলিশ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান বলেন, প্রতিটি ঘটনায় ছিনতাইয়ের স্টাইল ছিল একই। তাদের টার্গেট বয়স্কদের। মোটরসাইকেল দিয়ে সিএনজি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা ও মূল্যবান জিনিস লুট করত গ্রেফতারকৃতরা। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজ থেকে ব্যক্তিদের ছবির সাথে আসামিদের চেহারার হুবহু মিল পাওয়া যায় এবং পুলিশের নিকট ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত থাকার কথা তারা স্বীকারও করে। এর আগে আইন অনুযায়ী আসামিদের’ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণের জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়।

তিনি বলেন, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা মূলত ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী নারী ও বয়স্কদের টার্গেট করতো। টার্গেটের পর উপযুক্ত স্থানে মোটরসাইকেল দিয়ে সিএনজি আটকে অস্ত্রের মাধ্যমে ভয় দেখিয়ে আঘাত করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যেত। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার। এসময় প্রেসব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতার চার জিনতাইকারীরা হলো , সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার চন্দনভাগ গ্রামের মৃত: আব্দুল জলিল এর ছেলে বেলাল আহমেদ ওরফে জাকির ওরফে জাকারিয়া মোল্লা, সিলেট মহানগরের শাহপরান থানার মুক্তিরচক এলাকার লাল মিয়ার ছেলে কামাল মিয়া, উসমানীনগর উপজেলার নাগেরকোনা গ্রামের মৃত: নিজাম উদ্দিনের ছেলে হোসেন ওরফে তৌফিক ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জ গ্রামের আব্দুল মতলিব এর ছেলে বাবুল আহমেদ। পুলিশ ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারকালে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, নগদ টাকা সহ লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সারোআর আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সিলেট শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে একাধিক ছিনতাই ও ডাকাতি মামলার এসব আসামিকে গ্রেফতার করে। আর আগে ওই চক্রকে গ্রেফতারে পুলিশের একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪)