সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : পোস্টার, ব্যানারের দখলে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ দুর্জয় ভৈরব। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে চলছে পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুন টাঙ্গানোর মহোৎসব। শহরের অলিগলি, হাটবাজার, বিভিন্ন এলাকাসহ বঙ্গবন্ধু সরণি সড়কে ব্যানার, পোস্টারে ছেয়ে গেছে। বাদ পড়েনি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপর নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য দুর্জয় ভৈরব। এতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী চতুর্থ ধাপে সারাদেশে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই প্রচার প্রচারণা চলছে ব্যাপকভাবে। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় শহর, গ্রাম জুড়ে ছেয়ে গেছে নানা রকম পোস্টার ব্যানার।

পুরো শহর, গ্রাম যেন উৎসব। এই ব্যানার, পোস্টারে দখলে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য দুর্জয় ভৈরবও।
কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী হিসেবে খ্যাত ভৈরব। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য দুর্জয় ভৈরব। এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। তাছাড়া প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস আসলে হাজারো মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয় এই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্যটি। এর পর খবর রাখে না কেউ। এই যেমন নির্বাচনের ব্যানার-ফেস্টুনে সেঁটে দেওয়া হয়েছে স্মৃতি ভাস্কর্যটি।

জনৈক এক পথচারী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনাকে অসম্মান করার জন্য এ ধরনের কর্মকা- মোটেও সুফল বয়ে আনে না। নির্বাচনের নামে স্মৃতি ভাস্কর্যে এসব পোস্টার ব্যানার লাগানো অবশ্যই দুঃখজনক। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সম্ভাব্যপ্রার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্যে পোস্টার ও ব্যানার এতোটাই জঘন্যভাবে লাগিয়েছেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকাটিও মুছে ফেলেছেন।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম গোলাম মুর্শেদ খান জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য দুর্জয় ভৈরবে যত্রতত্রভাবে পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে গেছে। যেহেতু স্মৃতি ভাস্কর্যটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পৌরসভার তাই মেয়রের সাথে কথা বলে দ্রুত দুর্জয় স্মৃতি ভাস্কর্য থেকে পোস্টার, ব্যানার সরানোর ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ভৈরব পৌর মেয়র আলহাজ্ব মো. ইফতেখার হোসেন বেনু বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর পৌরসভার পক্ষ থেকে পোস্টার ও ব্যানারগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তারা একটু সচেতন হলে ভাস্কর্যের সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব। ভাস্কর্যের সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখা শুধু পৌরসভা বা প্রশাসনের দায়িত্ব না। এটা ভৈরবের সর্বস্তরের মানুষের দায়িত্ব। এছাড়াও শহীদের প্রতি সম্মান ও ভৈরবের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য যে কোনো স্থানে ব্যানার ফেস্টুন লাগানো থেকে বিরত থাকার জন্য সকলকে আহ্বান জানান তিনি।

(এসএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪)