নীহার রঞ্জন কুন্ডু, ময়মনসিংহ : নেত্রকোনা কেন্দুয়াতে চাচার অংশের জমি ভাতিজা কর্তৃক দখল ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। আভিযোগকারীর মতে মাওলানা মুফতি ফজলুল হক তালুকদারের বাড়ি নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৪ নং গরাডোবা ইউনিয়নের ভরাপাড়া গ্রামে। মুফতি ফলজলুল হক তালুকদারের পিতা আলী নেওয়াজ তালুকদারের মৃত্যুর আগে তার সহায় সম্পদ জমি জমার সুষম বন্টনের মাধ্যমে চার ছেলে ও এক কন্যার নামে অসিয়তনামা করে যান মৌখিকভাবে।

মাওলানা মুফতি ফজলুল হক ছিলেন আলী নেওয়াজ তালুকদারের ৫ সন্তানের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ। তিনি লেখাপড়ার সুবাদে অধিকাংশ সময়েই বাড়ির বাহিরে থাকতেন। পরিবারের সবচাইতে সহজ সরল এবং ভালো মানুষ হিসাবে পরিচিত ছিলেন ফজলুল হক। যখন ফজলুল হকের পিতা আলী নেওয়াজ তালুকদারের মৃত্যু হয় তখন তিনি ছাত্রজীবন শেষ করে সবে মাত্র কর্ম জীবনে প্রবেশ করেছেন।

মৃত আব্দুল আজিজ তালুকদারের সন্তানগণ ও মেয়ে জামাই আব্দুল বারি পর্যন্তু তাহার সাথে অসহযোগীতা মূলক আচরণ করতে থাকে। সেই সাথে তাকে মানষিক ভাবে চাপে রাখে । এদিকে বড় চার ভাইয়ের মৃত্যুর পর মুফতি ফজলুল হকের পৈত্রিক সম্পত্তি হিস্যা অনুযায়ী বুঝে নেওয়া এবং পাওয়াটা ঝুঁকির মধ্যে পরে যায়। কারণ তার বড় ভাইয়ের সন্তানগণ ও মেয়ের জামাই আব্দুল বারি দলিলের কোন কাগজপত্রই দেখাতে রাজী নয়। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে মুফতি ফজলুল হক ভূমি অফিসে যান এবং কাগজপত্র তুলে মারাত্মক অসংগতি দেখতে পান।মরহুম পিতা আলী নেওয়াজ তালুকদারের মৌখিক কথা এবং তার সরলতা কোন কাজে আসেনি।

এদিকে মুফতি ফজলুল হক জানতে পারেন ভরা মৌজার তার মালিকানাধীন কিছু জমি জমা বড় ভাই আব্দুল আজিজ তালুকদারের সন্তানরা নিজেদের দাবি করে একই গ্রামের আশরাফুল হক টিপুর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। অন্য দিকে জমির ক্রেতা আশরাফুল হক টিপু অবৈধ অর্থের বিনিময়ে কেন্দুয়া ভূমি অফিসে খারিজ আপত্তি সত্তেও উল্লেখিত জমিটি নিজ নামে খারিজ করিয়ে নেন। সেই সাথে আব্দুল আজিজ তালুকদারের সন্তানগণ ক্রমাগত প্রভাব দেখাতে থাকে এবং মুফতি ফজলুল হকের মালিকানা অংশের ভূমি দখল করে নেওয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা দেয়। কিন্তু মুফতি ফজলুল হক সমাধানের সকল চেষ্টা করেও ব্যর্থ হোন। কারণ মুফতি ফজলুল হকের সকল জমির দখলের ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে ভাতিজা গং। এভাবেই একই কায়দায় মুফতি ফজলুল হককে হেনস্তা ও লাঞ্চিত করতে থাকে ভাতিজা গং। ফলে মুফতি ফজলুল হক অসুস্থ হয়ে পরেন। অসুস্থ অবস্থায় মুফতি ফজলুল হক বেশ কয়েক বার গ্রামের চেয়ারম্যান গণ্যমাণ্য ব্যক্তি ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা চালান। পরবর্তীতে মুফতি ফজলুল হকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং এক পার্যায়ে স্ট্রোক করে মারা যান।

মুফতি ফজলুল হক তালুকদারের মৃত্যুর পর উনার সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি পারিবারিকভাবেই বড় ছেলে হওয়ার সুবাদে দায়িত্ব এসে পরে ছেলে ইউসুফ আব্দুল্লাহ এর উপর। ইউসুফ আব্দুল্লাহ ও তার অন্যান্য ভাইবোনেরাও তার বাবার অকাল মৃত্যুর জন্যে তার চাচাতো ভাই চাচাতো বোন জামাই আব্দুল বারি সহ জমির সাথে জড়িত প্রতারক চক্রকে দায়ি করেন।

জানাগেছে এর পরও ইউসুফ আব্দুল্লাহ ও তার ভাইবোনেরা পারিবারিক সম্পৃতি বজায় রাখার স্বার্থে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছে পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্যে। কিন্তু আব্দুল আজিজ তালুকদারের সন্তানগণ মেয়ের জামাই বারি হুমকি ধামকি এখনো অব্যাহত রেখেছে। তাদের এই উদ্ধত্ব্য পূর্ণ আচরণের কারণে উপায়ন্ত না দেখে আইনিভাবে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে মৃত আব্দুল আজিজ তালুকদারের উত্তরাধিকারীর কাছে। কিন্ত হুমকী অব্যহত আছে বলে জানা গেছে। ফলে ইউসুফ আব্দুল্লাহসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আতংকে দিন কাটাচ্ছে বলে জানা গেছে। ইউসুফ আব্দুল্লাহ পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধার, জীবনের নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট গ্রামের আইন শৃংখলা বজায় রাখার স্বার্থে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার দাবি করেন।

(এনআরকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪)