মিশুক আহমেদ জয়, কুষ্টিয়া : ক্যাম্পাসে একে একে তিনটি গাছ কাটা পড়তে দেখল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মুক্ত মঞ্চ নির্মাণের জন্য এই গাছগুলো কাটা হচ্ছে।

গতকাল রবিবার সকালে ক্যাম্পাসের বটতলায় এই তিনটি বড় গাছ কেটে ফেলতে দেখে ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অনেকে।

গাছ ঘেরা বটতলা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আড্ডা দেওয়ার একটি স্থান। আড্ডারত শিক্ষার্থীরা ছায়া পেত গাছগুলো থেকে।

সেখানে গাছ কাটা দেখে ব্যথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফা ইসলাম ভাবনা বলেন, ‘এই গাছগুলো আমাদের সম্পদ। এগুলো সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। যদি খুব প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এই গাছগুলো কাটতে হয়, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ ইমনের চাওয়া আর যেন গাছ কাটা না হয়। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। আমাদের আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন আর একটি গাছেও হাত না দেয়।

মুক্ত মঞ্চ তৈরির জন্য যে স্থানটি বেছে নেওয়া হয়েছে, তার প্রায় ৩০ মিটার দূরত্বে দুটি একাডেমিক ভবন রয়েছে। ওই ভবনে অন্তত এক ডজন বিভাগের গবেষণাগার ও শ্রেণী কক্ষ।

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা বলছেন, শ্রেণী কক্ষের কাছে মুক্ত মঞ্চ তৈরি ঠিক হবে না। তাই মুক্ত মঞ্চ অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া দরকার।

ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শরিফ মো. আল-রেজা বলেন, ‘বটতলায় প্রোগ্রাম হলেও আমাদের ক্লাস পরীক্ষায় ডিস্টার্ব হয়। তারপর যদি সেখানে মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের ক্লাস-পরীক্ষায় আরও ডিস্টার্ব হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে একটি কাজ দিয়েছিল। আমি ওইকাজের চাহিদা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’

গাছ কাটার বিষয়টি নিজের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না জানিয়ে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ।

এ বিষয়ে এস্টেট অফিসের দায়িত্বরত উপ-রেজিস্ট্রার শামসুজ্জামান জোহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের অনুমতি নিয়ে গাছগুলো কাটা হয়েছে। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনও সিদ্ধান্ত নেই।’

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(এমজে/এসপি/মার্চ ০৪, ২০২৪)