যশোর প্রতিনিধি : যশোরে ফলের দাম ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে ফলের সরবরাহ কিছুটা কম। ফলে রোজার মাসে হঠাৎ দেশি-বিদেশী ফলের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।

সরেজমিন যশোর শহরের দড়াটানা, বড় বাজার এলাকার ছোট বড় ফলের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশি ফলের সরবরাহ কম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে। বাজারে দেশি নারকেল কুল ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের যার দাম ৬৫ থেকে ৭০ টাকা ছিলো। অর্থাৎ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা কেজিতে। নাইনটি কুলের দাম ১০০ টাকা কেজি।গত সপ্তাহে যা ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এখানে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। পেঁয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। পেয়ারার দাম স্থিতিশীল থাকলেও সরবরাহ কমে গেছে। তরমুচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। তবে রোজার ভিতরে প্রথম ১৫ দিনে তরমুজের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। তালতা, বেল ছোট বড় আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি পিচে দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। ডাব বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। ডাবের দাম অপরিবর্তীত থাকলেও ছোট সাইজে ডাবে বাজার সয়লাভ। কাগজি লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। গত সপ্তাহে ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছিলো। অর্থাৎ দাম বেড়েছে হালিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। দুধ সাগর কলা ১ ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। গত সপ্তাহে যা ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। ঠটে কলার দামও বেড়ে ৭০ টাকা হালি হয়েছে। পাকা পেঁপে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যা ৬৫ টাকা কেজি ছিলো।

অন্যদিকে আমদানিকৃত ফলের ভিতরে সাদা আঙ্গুর ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেনু লেবু ২০০ টাকা কেজি ও কমলা লেবু ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে। আঙ্গুর উৎপাদনের সময় শেষের দিকে। ফলে বাজারে আঙ্গুর কম পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে দাম কিছুটা বেশি ছিলো। প্রতিদিন দামের রদবদল হচ্ছে। বড় সাইজের বেদানা ফল বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাজে ৩৮০ টাকা বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ বেদানার দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। আপেল বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে যা ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আপেলের ধরণ ভেদে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। রোজার সময় খেজুরের দাম অধিক হারে বৃদ্ধি পায়। বাজারে এখন খেঁজুর বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ১৬০০ টাকা কেজি দরে। এর ভিতরে মেউজুন খেজুরের দাম সব চেয়ে বেশি। খোলা খেজুরের দাম কম। জাত ভেদে ফরিদা খেজুর ৫০০ টাকা কেজি, দাবাস ৪৮০টাকা, জিহাদি ৩৫০ টাকা, আজুয়া ১০০০ টাকা, মরিওম ১০০০ টাকা, নাগাল ৫৬০ টাকা, ২৫০ গ্রামের খোলা খেজুরের প্যাকেট ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খেজুরের দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দোকানিরা বলছেন আমদানি কম থাকাতে দাম বাড়ছে।

দড়াটানায় ফল বিক্রেতা বাবু মির্জা বলেন, পাইকারি তরমুজ পিচ হিসাবে কিনলেও দাম অনেক বেশি। যে কারণে কেজি ধরে বিক্রি করতে হয়। ১৫ রোজা পর্যন্ত তরমুজের দাম বাড়বে। এর পর বাজুয়া, কয়রা তরমুজ উঠলে তখন দাম কিছুটা কমবে।

বড় বাজারের ফল ব্যবসায়ী মাহমুদ হাসান বাবু বলেন, দেশি ফলের দাম কিছুটা কম। বিদেশী ফলের দাম বেশি। বড় বড় ব্যবসায়ীরা ফলের দাম নিয়ন্ত্রণ করে। ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের।

আব্দুল জলিল নামে একজন সাধারণ ভোক্তা বলেন, ফলের দাম কিছুটা বাড়লেও ক্রয় সীমার মধ্যে আছে। তবে রোজার ভিতরে দাম বাড়লে সেটা ক্রয় সীমা অতিক্রম করবে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার ভিতরে আনলে সাধারণ ভোক্তার ভোগান্তি কমবে।

ফল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবল হোসেন চুন্নু বলেন, ফলের বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই। যে দামে ফল কেনা হয় তার উপর ১০ থেকে ২০ টাকা লাভে বিক্রি করা হয়। রোযার ভিতরে ফলের দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। দেশি ফলের মৌসুমে ফলের দাম কমে। মৌসুম ছাড়া দেশি ফলের সরবরাহ কম থাকে। বাজারে সরবরাহ কম থাকলে স্বাভাবিক ভাবে দাম বৃদ্ধি পায়।

ফলের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক সৈয়দা তামান্না তাসনীমের মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(এমএসএ/এএস/মার্চ ০৯, ২০২৪)