সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কানের দুল চুরি নিয়ে সন্দেহ করে অথৈয় আক্তার মীম (২২) নামে এক গৃহবধূকে মারধোর করে চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আতকাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম। গৃহবধূ অথৈয় আক্তার মিম আতকা পাড়া এলাকার জীবন মিয়ার স্ত্রী ও কুলিয়ারচর উপজেলার উত্তর সালুয়া এলাকার বিল্লাল মিয়ার মেয়ে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রবিবার (১০ মার্চ) কালিপ্রসাদ আতকা পাড়ায় শেখ বাড়ির আনোয়ার মিয়া, মুগল মিয়া, হোসেন আলী, সুমন মিয়া ও শামীম মিয়াসহ তাদের পবিরারের সদস্যরা একটি দেড় আনা কানের দুলের চুরির ঘটনায় জীবন মিয়ার স্ত্রীকে অথৈয়কে মারধোর করে মাথার চুল কেটেই ক্ষান্ত হয়নি। পরে মীমকে একটি গাছের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা বেধে রাখে। খবর পেয়ে অথৈয় আক্তারের বোন সাথী বেগম ১১ মার্চ দুপুরে তাকে ছাড়িয়ে আনে।

এ বিষয়ে অথৈয় আক্তারের স্বামী জীবন মিয়া জানান, আনোয়ার মিয়া, মুগল মিয়া, হোসেন আলী, সুমন মিয়া ও শামীম মিয়াসহ তাদের পরিবার দীর্ঘদিন যাবত আমাদের অত্যাচার করে আসছে। আমাদের বাড়ির ভিতরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমরা তাদের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে আমার স্ত্রীকে তারা মারধোর করে মাথার চুল কেটে গাছের সঙ্গে বেধে রেখেছে। আমি এর বিচার চাই।

অভিযোগকারী সাথী বেগম বলেন, অথৈয় আমার খালাতো বোন। ১ বছর আগে আতকা পাড়া এলাকার জামাল মিয়ার ছেলে জীবনের সাথে আমার বোনের বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন যাবত আনোয়ার গংদের সাথে জামাল মিয়ার পরিবারের দ্বন্দ্ব ছিল। তারা আমার বোনকে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধোর করে বেধে রেখে মাথার সমস্ত চুল কেটে দিয়েছে। আমি স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বোনকে ছাড়িয়ে আনি। আমরা অসহায় মানুষ। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।

এ বিষয়ে কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লিটন মিয়া জানান, আমি যতটুকু জেনেছি ও শুনেছি তাদের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। বাড়ির মহিলারা বিবাধে জড়িয়েছে। আমি স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে মুগল মিয়া বলেন, অথৈয় আমার আত্মীয়। সে আমাদের ঘরে চুরি করেছে। তার প্রমাণও রয়েছে। এ নিয়ে বাড়ির মহিলাদের ঝগড়া হয়েছে। আমরা পুরুষরা বাড়ির বাইরে ছিলাম। বাড়িতে ফিরে তাদের ঝগড়া মীমাংসার চেষ্টা করেছি। আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। আমরা কোন ভাবেই ঝগড়ায় জড়িত ছিলাম না।

ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, গৃহবধূর চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

(এসএস/এসপি/মার্চ ১২, ২০২৪)