শেখ ইমন, শৈলকুপা : গমে দেখা দিয়েছিল ব্লাস্টের সংক্রমণ। তাতে আবাদ প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল কৃষকরা। তবে এবছর আবার আবাদ শুরু করলে ফলন ভাল হয়েছে। তাতে কৃষকের মন ভাল থাকারই কথা। কিন্তু না,নতুন এক সমস্যার মুখে পড়েছে কৃষকরা। গমে দেখা দিয়েছে ইঁদুরের আক্রমণ। তাতে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষকরা। অনেকেই ইঁদুর মারতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শমতো ক্ষেতে ওষুধ দিয়েছেন, তাতেও লাভ হয়নি। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শত শত কৃষকের গম ক্ষেতে এমন আক্রমণ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। তবে ঠিক কী পরিমাণ জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ হয়েছে তা জানাতে পারেনি উপজেলা কৃষি বিভাগ। ইঁদুরের কারণে এবারের মৌসুমে ১২ টন গম নষ্ট হতে পারে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

কৃষকেরা জানান, উপজেলার কবিরপুর,বারইপাড়া,আউশিয়া,মনোহরপুর,দামুকদিয়া সহ বিভিন্ন গ্রামের শত শত কৃষকের ক্ষেতে শিষ বের হওয়ার সময় ইঁদুর আক্রমণ করেছে। এখন ক্ষেতজুড়ে শত শত গর্ত। গ্যাস ট্যাবলেট,বিষ প্রয়োগ করেও প্রতিকার মিলছে না। প্রতি বিঘা জমিতে গম চাষে খরচ হয়েছে ১৪-১৫ হাজার টাকা। ফলন আর বাজারে দাম ভালো পেলে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হতো। কিন্তু এবার ইঁদুরের আক্রমণে লোকসানের শঙ্কায় কৃষকরা।

হাবিবপুর গ্রামের গম চাষি জামাল উদ্দিন বলেন,‘ক্ষেতের গমের দানা হাওয়ার আগমুহূর্তে ইঁদুর লেগেছিল। প্রথম থেকে ওষুধ দিলেও কোনো কাজ হয়নি। জমি থেকে গম কেটে নিয়ে ইঁদুর গর্ত ভরছে। ইঁদুরের কারণে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’

কৃষক মো. বাচ্চু ও আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর গমের দানা ভালো হয়েছিল। কিন্তু ইঁদুর সব শেষ করে দিল। যে যা বলেছে, ক্ষেতে সবই দিয়েছি। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। কষ্ট করে গমের আবাদ করেছিলাম। খেতের এই অবস্থা দেখে কষ্টে আমরা এখন আর মাঠে যাই না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শৈলকুপা উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হাসনাত বলেন, ‘যেসব জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ হচ্ছে, সেই জমিতে গ্যাস ট্যাবলেট, গর্তে পানি দেওয়াসহ কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। ৮৫ শতাংশ গম পরিপক্ব হয়েছে। তাই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি, পরিপক্ব গম যেন দ্রুত কেটে নেয়।’

(এসই/এএস/মার্চ ১৩, ২০২৪)