সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল তথ্যের চিকিৎসায় নবজাতক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে পৌর শহরের লক্ষীপুর এলাকার বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান আবেদীন হাসপাতালের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ডাক্তাররা হলেন, ডা. আমিন উদ্দিন আহম্মেদ, ডা. উম্মুল খায়ের মাহমুদা ও ডা. ফারজানা রহমান।

প্রসূতি নারী পৌর শহরের চন্ডিবের খাঁ বাড়ির আজাহারুল ইসলাম খানের স্ত্রী প্রমি খানম।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রসূতি নারী প্রমি খানম গর্ভবতি হওয়ার পর থেকেই আবেদীন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ছিলেন।

১৩ মার্চ বুধবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করেন ডা. আমিন উদ্দিন আহম্মেদ। রিপোর্ট দেখে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. উম্মুল খায়ের রোগীর স্বজনদেরকে জানান বাচ্চা ডেলিভারীর হতে আরো একমাস সময় বাকি আছে। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে স্বজনরা পুনরায় ১৫ মার্চ ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার উম্মুল খায়ের মাহমুদা একপর্যায়ে বলেন রোগীর অবস্থা বেশী ভাল না। রোগীকে আইসিইউতে ভর্তি করা লাগতে পারে। আপনারা রোগীকে দ্রæত ঢাকায় নিয়ে যান। তখন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তড়িঘড়ি করে রোগীকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। ঢাকার একটি হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে ডাক্তার দেখেন তিন থেকে চার দিন আগেই নবজাতকটি গর্ভাবস্থায় মারা গিয়েছে। দায়িত্বশীল ডাক্তারের দেয়া ভুল তথ্যের ফলেই নবজাতকটি মারা যায়।

এঘটনায় প্রসূতি নারীর স্বামী আজাহারুল ইসলাম খান ১৬ মার্চ শনিবার সন্ধ্যায় বাদী হয়ে আবেদীন হাসপাতালের ডা. উম্মুল খায়ের মাহমুদাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে প্রসূতি নারীর স্বামী আজাহারুল ইসলাম খান বলেন, দীর্ঘদিন পর আমার ছেলে সন্তান হওয়ার সময় হয়েছিল। আমি টাকা পয়সা ইনকাম করছি পরিবারের জন্য। আজ আবেদীন হাসপাতালের ডাক্তারদের দেয়া ভুল ইনফরমেশনের কারণে আমি আমার সন্তান হারিয়েছি। একাধিকবার আল্ট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষা করেও তারা সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। শুধু পরিক্ষার নামে টাকা নিয়েছে। ঢাকায় নেয়ার পর ডাক্তাররা কয়েকটা পরিক্ষা করেই বলেছে আমার স্ত্রীর পেটে আমার সন্তানের হার্টবিট চলছে না। পরক্ষণে সিজার করে দেখেন নবজাতক শিশুটি মৃত। আমি আবেদীন হাসপাতালের ডাক্তারদের বিচার চাই।

এ বিষয়ে ডা. উম্মুল খায়ের মাহমুদার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে হাসপাতালটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ভুল চিকিৎসার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমাদের হাসপাতালে সিজার অপারেশনটি হয়নি। ঢাকায় একটি হাসপাতালে নবজাতক শিশু মারা গেছে।

এ ঘটনায় ভৈরব থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম জানান, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে রাতেই হাসপাতালটি পরির্দশন করে এসেছি। সন্ধ্যায় লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

(এসএস/এএস/মার্চ ১৭, ২০২৪)