রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল অভ্যন্তরে গাঁজার বাগান। হ্যাঁ পাঠক ঠিকই শুনেছেন। যদিও কেউ বলছেন গাঁজার গাছ, কেউ বলছেন ভাংগাছ। তবে সবাই একমত হয়েছেন যে, দুটি গাছই নেশাজাতীয় গাছ। দিনের পর দিন কয়েকশ গাঁজার গাছ বেড়ে বাগানে পরিনত হলেও তা চোখে পড়েনি ফরিদপুর সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

শত বছরের পুরনো ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালটি বেশ কয়েক বছর যাবত ধুঁকছে নানান জটিলতায়। রোগিদের অভিযোগও কম নয় হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। নানান সময়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রোগীরা। তথাপিও ফরিদপুর জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ মুজিব সড়কে অবস্থিত এ হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন শতশত রোগী।

হাসপাতালের অভ্যন্তরে জনচলাচলের রাস্তার পাশেই গড়ে উঠেছে কয়েকশ গাঁজা কিংবা ভাংগাছ। জেনারেল হাসপাতালের উত্তর দিকে স্টাফ কোয়ার্টারের পথের পাশে ও হাসপাতালের উত্তর পাশে শত শত গাঁজার গাছের বেড়ে উঠেছে এসব গাছ। অনেকে বলছেন, বছরের পর বছর ধরে এভাবেই গাঁজা কিংবা ভাংগাছগুলো বেড়ে উঠেছে। কেউ কেউ বলছে নিরাপদ যায়গা মনে করে কেউ গাঁজার চাষ করে থাকতে পারেন।

প্রায় চার-পাঁচ বছর যাবত এই গাঁজার গাছগুলো বেড়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারের বাসিন্দারা। তারা বলেন, আগে এসব গাছ আরও বেশি ছিল। অনেক গাছ কেটে তারা পরিষ্কার করেছেন। তারপর আবার হয়েছে। সবার সামনেই বেড়ে উঠেছে। কিছু ছেলেপুলে এগুলো ছিঁড়ে নিয়ে রস করে খায় বলে তাদের জানিয়েছে। এতে নাকি কাশি ভালো হয়। আবার কেউ কেউ এমনিতেই ছিড়ে নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, এমন গাছ হাসপাতালের অভ্যন্তরে রয়েছে। এছাড়া জেলখানার সড়কের পাশে, শহরের রাস্তার ধারে কিছু কিছু জায়গায় এ গাছের দেখা মেলে। তবে এ গাছগুলো অনেকটা দুপুরিয়া ফুলগাছের মতো দেখতে হওয়ায় ফুলগাছ ভেবে কাটা হয় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাদকসেবী যুবক বলেন, এসব গাছের মধ্যে বেশিরভাগ ভাংগাছ। অনেক গাঁজাগাছও রয়েছে। তবে এত ছোট গাছ থেকে পাতা নিয়ে শুকিয়ে নেশা করা যায় না। গাছগুলো আরও বড় হয়ে পক্বতা পেলে তা দিয়ে নেশা করা যেতে পারে। অনেকেই আবার এইগুলো ছিঁড়ে নিয়ে রোদে শুকিয়ে বিক্রিও করেন বলে জানান ওই যুবক।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন গণমাধ্যমকে বলেন, গাছগুলো কাটার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া মাঝে-মধ্যেই গাছগুলো কাটা হয়। আবার এমনিতেই গজিয়ে যায়। সময়মতো লেবার না পাওয়ায় এবার কাটতে দেরি হয়েছে।

তবে, শহর জুড়ে যত্রতত্র এসব গাঁজা গাছ ও ভান গাছের বাগানকে ভালো চোখে দেখার সুযোগ নেই বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।

(আরআর/এএস/মার্চ ১৯, ২০২৪)