শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ, সোনারগাঁ : কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত টিনের ঘর ও আসবাবপত্র বিক্রির অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের ১১২ নং দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মেরিনা সুলতানার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী,অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। রাতের আঁধারে স্কুলের মালামাল বিক্রির অভিযোগে উপজেলার আনন্দবাজারে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মেরিনা সুলতানাকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে চুরি করে সরকারি স্কুলের মালামাল বিক্রি করার কারণ জানতে চেয়ে জনৈক ব্যক্তি ধমকাতে থাকে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইতোমধ্যে ভাইরাল।

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানান,দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মেরিনা সুলতানা ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের পুরাতন টিনের ঘর ও পুরনো আসবাবপত্রসহ মূল্যবান মালামাল রাতের আঁধারে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এলাকাবাসী আরও বলেন, স্কুল ছুটি হওয়ার পর রাত আটটা নয়টা পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্কুলে অবস্থান করেন। এবং সু্যোগ বুঝে বিভিন্ন সময়ে স্কুলের মালামাল বিক্রি করে দেন। পরে সে নিজে বাদী হয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল চুরি হয়েছে উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ১৯ মার্চ সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের আশপাশের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে এব্যাপারে সংবাদ কর্মীদের কিছু না বলতে অনুরোধ করেন।

দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মেরিনা সুলতানা বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের কোনো মালামাল চুরি করেননি, বিভিন্ন সময় মালামাল চুরি হয়েছে এবং চুরির ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগও করেছেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইসমাইলের মুঠোফোনে কল দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দূরে থাকেন তাই দামোদরদী স্কুলে নিয়মিত যাওয়া হয় না। আসবাবপত্র চুরির বিষয়টি তার জানা নেই।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দৌলতর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মেরিনা সুলতানা সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে একাধিকবার বলা হলেও তিনি সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতেন না। গত ১৮ ও ১৯ মার্চ সকাল নয়টায় উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বিদ্যালয়ে মেরিনা সুলতানার উপস্থিতি দেখতে না পেয়ে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে সকল দশটায় মেরিনা সুলতানা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমি দেখেছি এবং ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এসবি/এসপি/মার্চ ২০, ২০২৪)