মোঃ শাজনুস শরীফ, বরগুনা : বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের মুছুল্লী বাড়ী সংলগ্ন কুকুয়া নদীর উপর নির্মিত লোহার সেতুটি ভেঙে পড়ার চার বছর পরেও মেরামত না হওয়ায় চরম ভোগান্তি ও দূর্ভোগে পড়েছে ওই ইউনিয়নের ছয় গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ ও শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) আমতলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫- ২০০৬ অর্থ বছরে ৯৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি লোহার সেতু উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের মুছুল্লী বাড়ী সংলগ্ন কুকুয়া নদীর উপর নির্মাণ করা হয়। গত চার বছর পূর্বে ২০২০ সালের ১২ মার্চ রাতে সেতুটির মাঝ বরাবর দেবে যায়। পরে স্থাণীয় স্কুল শিক্ষক আবুু সালেহর উদ্যোগে স্থাণীয়দের সহায়তায় দেবে যাওয়া ওই লোহার সেতুর অংশে গাছের গুড়ি ফেলে পশ্চিম সোনাখালী, মধ্য সোনাখালী, আমতলা, উত্তর-পশ্চিম সোনাখালী ও পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ উপজেলা শহর আমতলীসহ গাজীপুর বন্দর ও আশে পাশের গ্রামগুলোতে সহজভাবে চলাচল করতো।

এছাড়া সোনাখালী কলেজ, মারকাজুল উলুম মাদরাসা, গাজীপুর সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা, গাজীপুর বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুকুয়া হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ওই সেতু পারাপার হয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতো। বছর খানেক আগে ওই সেতুর দেবে যাওয়া অংশটি পুরোপুরি ভেঙ্গে নদীতে পরে গিয়ে দুই পারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তি ও দূর্ভোগে পড়ে ওই ছয় গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ভোগান্তিতে পড়েছে ওই ছয় গ্রামের কৃষকরাও। তাদের উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য ও অন্যান্য মালপত্র তারা হাট-বাজারে নিয়ে যেতে পারছেন না।

এখন বিকল্পপথে দুই তিন কিলোমিটার ঘুরে গাজীপুর বন্দর সেতু পার হয়ে ওই ছয় গ্রামের ভূক্তভোগী মানুষ ও শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হচ্ছে।

স্থাণীয় ভূক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা স্থানীয়রা সেতুটি মেরামতের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানালেও অদ্যবদি তারা সেতুটি মেরামত করেনি। ভিমসহ সেতুর মধ্যাংশ নদীতে দেবে গেলে এতোদিন দেবে যাওয়া অংশে গাছের গুড়ি ফেলে চলাচল করেছি। বছর খানেক আগে সেতুর দেবে যাওয়া অংশটি পুরোপুরি ভেঙ্গে নদীতে পরে গিয়ে দুই পারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে এলাকাবাসী চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

গাজীপুর ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা ফোরকান মিয়া বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় আশপাশের ছয় গ্রামের মানুষের দূর্ভোগের শেষ নেই। শত শত কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে উঠাতে পারছেন না। আমাদের মাদরাসায় অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরাও দুই তিন কিলোমিটার ঘুরে গাজীপুর বন্দরের সেতু পার হয়ে ক্লাশ করতে আসে।

পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের প্রিন্স মৃধা বলেন, ওই ছয় গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা মুছুল্লী বাড়ী সংলগ্ন ওই সেতু। বিভিন্ন হাট-বাজারে মালপত্র পরিবহনে যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে ওই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয় ওই গ্রামের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে। গত চার বছরেও ধসে পড়া সেতুটি মেরামত না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সহস্রাধিক মানুষ।

আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কুকুয়া নদীর ওপর নির্মিত ওই সেতুটি ২০২০ সালে ভেঙে পড়ে। ভেঙে যাওয়া সেতুটি সংস্কারের কোন সুযোগ নেই। আগে ভেঙে যাওয়া সেতুটি অপসারণ করতে হবে। পরে নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তব পাঠানো হবে।

(এসএস/এএস/মার্চ ২১, ২০২৪)