শেখ লিটন, চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে মাছ মাংস ও সবজির দাম। সরকারি ভাবে ২৯টি খাদ্য পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু বাজারে দামের চিত্র বলছে উল্টো কথা। নির্ধারিত দাম কেউ মানছে না। সকল ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দাম উপেক্ষা করে ইচ্ছেমত দামেই বিক্রি করছে সকল খাদ্যপণ্য। ফলে প্রশাসন থেকে এখনো পদক্ষেপ ও বাজার মনিটরিং চোখে দেখা যায়নি।

জানা গেছে, গত ১৫ মার্চ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সদর কার্যালয়ে থেকে ২৯টি খাদ্য পণ্যের নির্ধারিত মূল্য তালিকা করে দেয়। এরপর সারাদেশে এই মূল্য তালিকা অনুযায়ী খাদ্য পণ্য বিক্রির আদেশ জারি করা হয়। কিন্তু আজ শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার নিচের বাজারে গরুর মাংসের কেজি সপ্তাহের ব্যবধানে ৩৬ টাকা বাড়িয়ে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর অন্যান্য বাজারের গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। এই মাংসের সরকারি মূল্য ৬৬৪ টাকা কেজি। এই নির্ধারিত দাম তোয়াক্কা না করে চলছে রমরমা বানিজ্য। তবে নির্ধারিত মূল্যে খাসির মাংস বিক্রি করা হচ্ছে ১ হাজার টাকা কেজি দরে।

শুক্রবার বাজারের মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও সব ধরনের মাছ কেজিতে ৩০ টাকা বাড়তি। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি মুরগি কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আর মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের চাহিদার মাংস প্যারিস, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দামে কেজিতে ৩০ টাকা বাড়তি। ফলে সাধারণ ক্রেতারা পড়েছে চরম বিপাকে। দিন দিন যেন সব ধরনের আমিষ পণ্যের বাজার লাগামহিন হয়ে পড়ছে। রোজার মাসে নিত্যপণ্যের দামে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস অবস্থা হয়ে পড়ছে।

এদিকে দাম কমেছে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও কাঁচা ঝালের দাম। তবে দামে অস্বস্তি আলুর বাজার কেজিতে আলুু বিক্রি করা হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। যেখানে এই আলুর দাম নির্ধারিত মূল্য কেজি প্রতি ২৮ টাকা। আর অন্যান্য সব ধরনের সবজি কেজিতে ১০ টাকা বাড়তি। তবে দাম বেশি লেবুর। একশো লেবু ৮০০ টাকা যা এক হালি খুচরা পর্যায়ে ৩৫ টাকা। সজনের ডাকা কেজিতে ২০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। দাম বাড়তি সব ধরনের ডালের দাম। কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। আর সব ধরনের প্যাকেট জাতের মসলা ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম ৫ টাকা বাড়তি। ডিমের দাম খাঁচিতে ৩০ টাকা কমে এখন তা বিক্রি করা হচ্ছে ৩০০ টাকা খাঁচি। যা খুচরা পর্যায়ে এক পিচ ডিম ১০ টাকা।

বাজারে আসা ক্রেতা বাবু জোয়ার্দ্দার বলেন, বাজারের দাম বাড়তি সব থেকে গরুর মাংসের। প্রতি কেজি মাংস ৭০০ টাকা। যা সরকারি দাম অমান্য করে বিক্রি করা হচ্ছে। এই ভাবে দাম বাড়তে থাকলে বাজারের আসা দুষ্কর হয়ে পড়বে। আর দাম যদি কমে তাহলে ভালো ভাবে খেতে পারবো। দাম সহনীয় করতে মাংসের বাজার তদারকি করতে হবে। তাহলে সাধারণ ভোক্তারা বাজাওে আসতে পারবে।

আরেক ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, মাছের বাজারের গেলাম। কিন্তু সব ধরনের মাছ কেজিতে অনেক দাম। প্রতেকটা মাছ কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। যা গত সপ্তাহে এই দাম ছিলনা। আর মুরগির মাংসতো প্রতি সপ্তাহে দাম বাড়ে। এবারো তাই দাম বাড়তি। এই ভাবে কি জিনিসের দাম বাড়তেই থাকবেই। না কি কমার সম্ভাবনা আছে। আর কত বাড়বে জিনিসের দাম। এই ভাবে আর পারছি না। সরকারের উচিত জিনিসের দামটা তাড়াতাড়ি কমানো।

এ বিষয়ে কথা হয় চুয়াডাঙ্গা বাজার কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম বলেন, গত সভায় সরকারি দাম বেঁধে দেয়া ২৯টি খাদ্য পণ্যসহ সব ধরনের দ্রব্যমূল্যের দাম নির্ধারিত দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হবে। তা ব্যাবসায়ীদের নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না কোনো খাদ্য পণ্য। এর ব্যত্যয় হলে প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে। আশা করছি বাজার সহনীয় করা সম্ভব হবে।

(এসএল/এসপি/মার্চ ২২, ২০২৪)