স্টাফ রিপোর্টার : কী কারণে ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে আদালত পর্যন্ত যেতে হলো, আদালত তার পুরো প্রক্রিয়ায় কীভাবে ইউনুসকে দোষী সাব্যস্ত করলেন এসব পাশ কাটিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে বারবারই সরকার প্রধানের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব তুলে আনার অপচেষ্টা অব্যাহত আছে। সম্প্রতি ডিপ্লমেট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তেমনই একটি মতামত। যেখানে নোবেল বিজয়ী মোহাম্মদ ইউনূস কেন বাংলাদেশে একা এবং বিচ্ছিন্ন বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার দুরত্ব তৈরি হওয়ার কথা উল্লেখ করা হলেও শত শত কর্মচারির মামলা ও ঋণগ্রস্থদের ওপর হয়রানির বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।

প্রবাসী লেখক মোবাশ্বার হাসান একসময় বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। ২০১৭ সালে তার পরিবার তাকে নিখোঁজ দাবি করার পরে তিনি নিজেই ফিরে আসেন। এবং পরবর্তীতে তিনি বিদেশে পাড়ি জমান।

ডিপ্লমেটে প্রকাশিত এই লেখায় লেখক দাবি করেন, ২০১১ সালে হাসিনার সরকার গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ইউনূসকে বয়সের শর্ত উল্লেখ করে অপসারণ করলে তাদের সম্পর্ক দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। যখন বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির উল্লেখ করে পদ্মা নদীর উপর সেতু প্রকল্পের জন্য ঋণ বাতিল করে তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, যেখানে হাসিনা ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রভাবিত করার অভিযোগ তোলেন। ইউনূস সেই বিষয়টি বরাবর অস্বীকার করেছেন।

এর আগে ২০০৮ সালে রাজনীতিতে আসা ও দল গঠনের ঘোষণা দিলে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল ধরে বলেও তিনি দাবি করেন। কিন্তু এসব অভিযোগ অনুযোগ উঠানোর আগে অবশ্যই আইনি দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে সেকোন লেখকের। বিশ্লেষকরা বলছেন, কেউ আমার জন্য অনেককিছু করেছে, কিন্তু তাতে তার অপরাধ দুর্বল হয়ে যায় না বা সেখান থেকে মুক্তির সুযোগ তৈরি হয় না। ড. ইউনূস সনামধন্য ব্যক্তি বলে তার কর্মচারিরা অধিকার বুঝে পাবে না এটা হতে পারে না।

মোবাশ্বার হাসান একজায়গায় লেখেন, বাংলাদেশি নোবেল শান্তি বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস আইনি প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। ১লা জানুয়ারি, বাংলাদেশের একটি শ্রম আদালত দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য ইউনূসকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়। ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রায় ১৯৮টি মামলায় অর্থ পাচার, কর ফাঁকি ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বর্ধিত জামিনে মুক্ত থাকায় তার জেলের মেয়াদ এখনো শুরু হয়নি। কিন্তু ড. ইউনুস না হয়ে যদি এই মামলায় অন্য কেউ থাকতেন তার ক্ষেত্রে কী হতো, আর তিনি বিশেষ ব্যক্তি হওয়ায় ছাড় পাচ্ছেন সেটি স্পষ্ট উল্লেখ হতে পারতো উল্লেখ করে সুভাষ সিহং রায় মনে করেন, ড. ইউনুস নানাবিধ চেষ্টা করেছেন যাতে করে শেখ হাসিনা সরকার টিকে না থাকতে পারে। তিনি রাজনীতিতে আসতে চেয়েছেন, তিনি পদ্মাসেতুর সময় বিশ্বব্যাংক নিয়ে ষড়যন্ত্রে জড়িত হয়ে বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন। উনাকে প্রতিহিংসাপরায়নভাবে কখনোই কিছু করা হয়নি।তার নিজের প্রতিষ্ঠানের শত শত কর্মী ন্যয়বিচারের জন্য আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছে। সেটি নিয়ে এখন মন্তব্য করার সুযোগ নেই।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৪, ২০২৪)