কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : বোয়ালমারীর অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, স্বজনদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন বোয়ালমারী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোকাদ্দেস হোসেন। 

ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর তিনি ১৯৭২ সালে বোয়ালমারী ডিগ্রি কলেজের বাংলার প্রভাষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। বিশ্ব বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করার পর যৌবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সময়টা তিনি দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং শিক্ষকতায় ব্যয় করেন।

মো. মোকাদ্দেস হোসেন বোয়ালমারী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছাড়াও ফরিদপুর ইয়াসমিন কলেজের উপাধ্যক্ষ, মধুখালি আইনউদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ এবং মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র ইউনিভার্সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

বোয়ালমারীর উপজেলার রাখালগাছি গ্রামে ১৯৪৫ সালে জন্ম গ্রহণ করলেও জীবনের অধিকাংশ সময় কাটে তাঁর বোয়ালমারী সরকারি কলেজ রোডের বাড়িতে। অবসর জীবনে তাঁর লেখালেখি করে সময় কাটতো। চলাফেরা ও শরীরে বার্ধক্যের ছাপ স্পষ্ট না হলেও মাঝে মাঝে তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগতেন। তিনি কয়েকদিন পূর্বে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেবার পর ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি হন। তারপর রেলায়েন্স জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ মার্চ দিবাগত রাত ১১-৩০ মি. তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

অধ্যাপক মোকাদ্দেস হোসেনের স্ত্রী শাহিদা বেগম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা (অবঃ),একমাত্র পুত্র তারেক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ পিপলস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক, জ্যেষ্ঠ কন্যা তামান্না শারমিন তুলি ২৭ তম বিসিএস (শিক্ষা) ও পরবর্তীতে ২৯ তম বিসিএস( প্রশাসন) এর চাকরি না করে স্বামী সহ নটিংহাম ইউনিভার্সিটি, ইংল্যান্ড এ কর্মরত আছেন। কনিষ্ঠা কন্যা তাবাসছুম আঞ্জুম তনু স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেয়ার পর মোহনা টিভির সংবাদ পাঠিকা।

মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২৭ মার্চ ২০২৪ বোয়ালমারী সরকারি কলেজ মাঠে জাতীয় পতাকার চাদরে ঢেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও গার্ড অব অনার জানানো হয়। বাদ যোহরের জানাজার নামাজে প্রিয় শিক্ষাঙ্গনে, প্রিয় শিক্ষার্থী ও স্বজনদের ভালোবাসায় তিনি সিক্ত হন। অতঃপর বোয়ালমারীর কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

(কেএফ/এসপি/মার্চ ২৬, ২০২৪)