ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলা দায়েরের ২৪ ঘন্টা পার না হতেই অভিযুক্ত সেলিম রেজাকে (২৯) আটক করেছে র‍্যাব-১২। বুধবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় র‍্যাব-১২, সিপিসি-২, পাবনা এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃত সেলিম রেজা পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার মশুড়িয়াপাড়া এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে।

মামলার এজাহার ও র‍্যাব জানায়, প্রতারক সেলিম রেজা দীর্ঘদিন ধরে একাধিক নামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়েদের টার্গেট করে যোগাযোগ স্থাপন করত। পরবর্তীতে নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী মেয়েদের সাথে হোটেল, রেস্টুরেন্টে দেখা করতো। নিজের ব্যবহৃত মোবাইলে তাদের সাথে ঘনিষ্টভাবে ছবি তুলতো। নিজ মোবাইলে ঘনিষ্ট মুহূর্তে ভিডিও ধারন করে সংরক্ষন করত। সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলে ভোক্তভোগীদেরকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে ডেকে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করত এবং টাকা দাবী করত। লোকলজ্জা, সম্ভ্রমের ভয়ে ভুক্তভোগী মেয়েরা বিভিন্ন সময় সেলিমের দাবী পূরন করতে বাধ্য হয়ে আসছিল।

এক বছর পূর্বে ঢাকার এক বিবাহিত মেয়ের সাথে ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে সেলিম রেজা তার সঙ্গে প্রতারনা এবং ব্ল্যাকমেইলিং শুরু করে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী মেয়েকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সেলিম আলাদা ভাড়া বাসায় উঠে। এবং বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। গোপনে অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলোর ভিডিও নিজ মোবাইলে ধারণ ও সংরক্ষন করে রাখে। এক সময় ভূক্তভোগী মেয়ে বিবাহের জন্য চাপ প্রয়োগ করাসহ পুলিশে জানাতে চাইলে সেলিম ওই বাসা থেকে পালিয়ে ঈশ্বরদীতে চলে আসে। ভুক্তভোগি মেয়ের সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

নিরুপায় হয়ে গত চারদিন আগে ভূক্তভোগী মেয়ে সেলিমের গ্রামের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী শহরের মশুড়িয়াপাড়ায় বাসায় এসে বিয়ের দাবীতে অবস্থান করে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

সেলিমের পরিবার থেকে কোনরূপ সমাধান না পেয়ে পরবর্তীতে ভূক্তভোগী ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগ দায়ের করে।

এর দুইদিন পর গত মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগি মেয়েটি নিজ থানা ঢাকার কদমতলী থানায় ধর্ষন মামলা করে।

এরপরই র‍্যাব-১২, সিপিসি-২, পাবনার কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হকের নেতৃত্বে র‍্যাবের আভিযানিক দল ২৪ ঘন্টা ব্যাপী দীর্ঘ অভিযান পরিচালনা করে পাবনা শহর থেকে সেলিম রেজাকে গ্রেফতার করে।

র‍্যাব-১২, সিপিসি-২, পাবনার কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সেলিম রেজা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ কিছু মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাদের সঙ্গে অন্তঃরঙ্গ ছবি ও ভিডিও ধারণ করে প্রতারণাসহ ব্ল্যাকমেইলিং করে আসার কথা স্বীকার করেছে।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে অনেক ভুক্তভোগি মেয়ে মোবাইলে সেলিম রেজার প্রতারণা ও ব্ল্যাক মেইলিংয়ের কথা র‍্যাবকে জানিয়ে তার শাস্তি দাবী করেছে।

(এসকেকে/এসপি/মার্চ ২৮, ২০২৪)