শেখ লিটন, চুয়াডাঙ্গা : আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় শেষ মুহূর্তে শপিংমল গুলোতে ঈদ কেনাকাটা জমে উঠেছে।  সকাল বিকাল সন্ধ্যা ও রাত পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার সবকটি শপিংমল গুলোতে পুরোদমে পোষাক বেচা বিক্রি বেড়েছে। প্রতিবারের মতো ক্রেতাদের আক্রর্ষণীয় বাহারি রকমের পোশাকে নজর কাড়ছে। ছেলে মেয়েসহ সব বয়সীরায় শপিংমল গুলোতে পোশাক কিনতে ভিড় জমাছে। তবে এবার ডলারের দাম বাড়ার কারণে পোশাকের দামটাও দ্বিগুণ। এবারো চুয়াডাঙ্গার প্রতিটা বিপণি বিতান ও শপিংমল গুলোতে যেন কোনো রকম চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি না হয়। সেজন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ থেকে কঠিন নজরদারির তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। 

আজ রবিবার চুয়াডাঙ্গার নিউ মার্কেট, পুরাতন গলির মার্কেট, আব্দুল্লাহ সিটি ও প্রিন্স প্লাজাতে ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, আর মাত্র বাকি ৩ দিন। তারপর মুসলিম ধর্মালবম্বীরা মেতে উঠবে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উৎসবে। তাই সকল মুসলিমরা ঈদ আনান্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য বাহারি রকমের পোষাক কেনাকাটায় ব্যস্ত। আর তাই জেলার সবকটি শপিংমল গুলোতে পোষাক শেষ মুহুর্তে কেনাবেচার ধুম পড়েছে। এবার দেশি পোশাকের চাহিদা কম। আর বিদেশিসহ পাশের দেশ ভারতের তৈরির পোশাকে নজর কাড়ছে ক্রেতা সাধরণদের। এবার সব ধরনের বাহারি রকমের পোষাকের দামটা অনেক বেশি। প্রতিটা পোষাকের পিছ ১০০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের আয়ের কাছে এই পোশাকের দামটা অনেকটা বেশি। দাম বেশি হওয়ার কারণে এবার পোশাক অনেকেই পছন্দ করার পর না কিনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। এবার ঈদের বেশ কিছু পোষাকে ছেলে মেয়েসহ শিশুদের জন্য নজড় কেড়েছে। মেয়েদের প্রতিবারের মতো এবারো আকর্ষনীয় কোনো থ্রীপিচ মার্কেটে না আসলেও। তবে বাহারি রকমের ইন্ডিয়ান তৈরির বিভিন্ন নামের মেয়েদের থ্রীপিচ নজর কাড়ছে। এই পোশাকের দামটা প্রায় ৩ হাজার টাকা। আর পাকিস্থানী তৈরির বাহারির রকমের থ্রীপিচ দামটা প্রায় ৪ হাজার টাকা। এই খানে দাম বেশি হলেও বেশ জমজমাট অবস্থায় ভাবে বিক্রি বেড়েছে এই সব তৈরির থ্রীপিচ গুলো। এছাড়া ছোট মেয়েদের জন্য নজর কাড়ছে বাহারি রকমের রংবেরংয়ের জামায়। এই পোশাকের দোকানে উপছে পড়া ভিড় জমতে দেখা গেছে। গৃহ-বধূদের জন্য নজর কাড়ছে কাঞ্জীবরণের শাড়ি। যার দাম ১ হাজার ৬০০ টাকা। এই শাড়িতে এবার গতবারের তুলনায় ১০০ টাকা বাড়তি। আলসাপরি শাড়ির দাম এবার ৫০০ টাকা বাড়তি হয়ে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এখানেও যেন শাড়ি কেনা বেচার ধূম পড়েছে। আর নিম্ন বিত্তদের জন্য ৭০০ টাকা দরে পাকিজা শাড়ি কেনা বেচা লক্ষ্য করা গেছে। আর বয়স্কদের জন্য সাড়ে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত লুঙ্গি বিক্রি করা দেখা গেছে। সকাল বিকাল ও সন্ধ্যার পর থেকে ঈদ বাজার জমে উঠছে।

এদিকে চুয়াডাঙ্গার প্রতিটা শপিংমল গুলোতে যাতে কোনো রকম ক্রেতাদের ভিরের মাঝে চুরি ছিনতাই, ডাকাতি না হয় সেজন্য চুয়াডাঙ্গার জেলা পুলিশের টিম সজাগ রয়েছে। প্রতিটা মার্কেটের প্রবেশ মুখে পুলিশ চেকপোস্ট ও টহল পুরিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ক্রেতারা যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিবারের জন্য সব রকমের পোষাক কিনে বাড়ি ফিরতে পারে। সেজন্য রাতের শহরে টহল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমানের উদ্যোগে। ঈদের আগে যদি কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাহলে তাৎক্ষণিক ব্যাবস্থা নেয়ার হুশিঁয়ারি দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান।

এদিকে কাপড় ব্যাবসায়ীরা জানান, গতবারের থেকে এবার সব ধরনের পোশাকের দাম বেশি। প্রতিদিনিই প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বেচা বিক্রি হচ্ছে। তবে এবার প্রতি পোশাকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বাড়তি। ডলারের দাম বেড়েছে তাই পোশাকের দামটাও বেশি। সকাল ১১ টার দিকে আর বিকাল ও সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত বিক্রির ধুম পড়ছে। আসা করা যাচ্ছে সামনে আর কয়দিনও বেচাকেনা বাড়বে। ব্যবসায়ি এবার প্রত্যাশি লাভবানের সাথে ঈদ পোশাকে জমজমাট বাণিজ্য করবে। আর তাই শেষ মুহুর্তে পোষাক বেচা কেনা বেশ জমজমাট।

কথা হয় ক্রেতা রাজা মিয়া বলেন, মার্কেটে পরিবারের জন্য পোষাক কিনতে তবে দাম বেশি নিয়েছে তাও কিনেছি। এবার এই ঈদটা খুব ভালো ভাবে পালন করবো। আর মার্কেট ঘুরছি দেখছি সব জিনিসের দাম বেশি। তারপরও মানুষ কেনাকাটা ভালো রকমি করছে। আর কয়দিন পর তো ঈদ তাই হাতে সময় কম। যা কেনার দরকার এখনি কিনে নিচ্ছে। সামনে এই কয়দিন বেচাকেনা আরও বাড়বে ব্যবসায়িদের। তখন ভিড় অনেক বেশি হবে। এই আগে ভাগে যা কেনার দরকার কিনে নিলাম।

আরেক ক্রেতা সাদিয়া আফরিন বলেন, এবার ঈদে মেয়েদের জন ভিন্ন রকমের থ্রীপিচ নেই। তবে ইন্ডিয়ান ও পাকিস্থানী তৈরির থ্রীপিচ গুলো অনেক ভালো। বলা যায় সুতিঁ কাপড়। আর এবার মেয়েদের জন্য বাহারি রকমের জামাও দেখছি খুব সুন্দর। তাই এবার আমরা খুব আনন্দের সাথে কেনাকাটা করছি। আর হরেক রকমের শাড়িও দেখছি। সবই যেন এবার বাইরের দেশের পোষাকের চাহিদা বেশি। আবার পুলিশ মোতায়েন আছে মার্কেট গুলোতে। তাই নিশ্চিন্তে কেনাকাটা করছি।

এ বিষয় কথা হয় চুয়াডাঙ্গা মার্কেটিং অফিসার সহিদুল ইসলাম বলেন, জমে উঠেছে ঈদ কেনাকাটার বাজার। এবার গতবারের থেকে বেশ জমজমাট বাজার। সকাল সন্ধ্যা সব সময় দেখছি বিপণী বিতানে বাহারি পোশাকে নজর কাড়ছে। তাই এবারো দামটাও বেশি। তবে এই ঈদে কেনাকাটায় যেন কোনো রকম ক্রেতা সাধারণ না ঠকে। বা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দাম বেশি নিলে আইনযুায়ি ব্যাবস্থা নেয়ার হুশিঁয়ারি দেন এই কর্মকর্তা। একই সাথে মার্কেট গুলোতে মনিটরিং অব্যাহত আছে।

(এসএল/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০২৪)