আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : গভীর রাতে দুটি স্প্রীড বোর্ডযোগে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে ডাকাত সন্দেহে জনতার হাতে অবরুদ্ধ হয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরিশালের ১৫ জন সদস্যসহ মোট ১৮ জন। মসজিদে মসজিদে ডাকাত সন্দেহে মাইকিং করে গ্রামবাসীকে জড়ো করার পর অভিযানিক দলের সদস্যদের আটকের পর পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা বাজারে। স্থানীয়দের দাবি, শুরুতে আটককৃতরা নিজেদের পরিচয়ের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য উপস্থাপন করতে না পারায় তাদের অবরুদ্ধ করে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। জানা গেছে, বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য বেচাকেনার গোপন সংবাদে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে সন্ধ্যা নদী ধরে আগৈলঝাড়ার পয়সারহাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। এ সময় অধিদপ্তরের ১৫ সদস্যকে বহন করা দুটি স্পিডবোটে দুইজন চালক ও একজন সংবাদকর্মীসহ মোট ১৮ জন ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, স্পিডবোট দুটি আগৈলঝাড়া যাওয়ার সময় উজিরপুর উপজেলার সাতলা বাজারসহ নদীপথে বিভিন্ন এলাকা হয়ে যাচ্ছিল। তখন বিভিন্ন জায়গার মসজিদের মাইকে ডাকাত সন্দেহে মাইকিং শুরু হয়। পথে স্পিডবোট দুটি আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা বাজারের কাছাকাছি স্থানে কচুরিপানায় আটকে যায়। পরে অধিদপ্তরের কয়েকজন সদস্য স্পিডবোট থেকে বাগধা বাজারে যান এবং বাকিরা পয়সারহাট লঞ্চঘাট এলাকায় মাদক উদ্ধারে চলে যান। কিন্তু সেখানে কোনো মাদক না পেয়ে বাগধা বাজারে তারা ফিরে আসেন।
আর এসময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন, উপ-পরিদর্শক ইশতিয়াক হোসেন, আব্দুল মজিদ, সহকারী উপ-পরিদর্শক ফারুক হোসেন, দিপঙ্কর মন্ডল, সিপাই আবু হানিফ, মোঃ ফয়েজ, সাইফুল ইসলাম, অফিস সহায়ক মোঃ জাহিদ, বেল্লাল হোসেনসহ তাদের ১৫ জন সদস্য, দুইজন স্পিডবোট চালক ও একজন সংবাদকর্মীসহ মোট ১৮ জনকে স্থানীয় জনতা ডাকাত সন্দেহে অবরুদ্ধ করে রাখে।

আগৈলঝাড়া বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি জানান, বিগত দিনে ওই এলাকার নদীপথে স্পিডবোট নিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছিলো। আর সেখানে থেকেই রাতে ওই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন জানান, কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি থেকেই বিপত্তি দেখা দিয়েছিলো। অভিযানে গিয়ে কিছু উদ্ধার হয়নি জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পূর্বেই ঢাকার ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একটি গ্রæপ মাদকগুলো নিয়ে গেছে। আগৈলঝাড়া থানার এসআই নূরে আলমসহ আমরা সেখানে গিয়ে নৈশ প্রহরীর সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, ট্রলারে থাকা কিছু বস্তা ভ্যানে ভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আলম চাঁদ জানান, গ্রামবাসীর কাছ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে তাদেরকে যেতে দেওয়া হয়েছে।

(টিবি/এএস/এপ্রিল ০৭, ২০২৪)