তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে এসিড ঢেলে প্রবাসীর স্ত্রী শারমিন বেগমের শরীর ঝলসে দেওয়া হয়েছে। রাতের আন্ধকারে সিঁধ কেটে ঘরে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা তার শরীরে এসিড ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যায় বলে ওই গৃহবধূর স্বজনরা অভিযোগ করেছেন। পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১ টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উরফি ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে প্রবাসী হানিফ মুন্সির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

শারমিন বেগমের স্বজনরা জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঘরের সিঁধ কেটে কয়েকজন যুবক ঘরে প্রবেশ করে শারমিনকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলেন। এরপর তারা তাকে চেপে ধরে গায়ে এসিড ঢেলে পালিয়ে যায়। শারমিন যন্ত্রনায় চিৎকার করলে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে ওই গ্রামে একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। সে ঘটনায় শারমিনের বাবাকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। তারপর এ ঘটনা ঘটলো। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এ ঘটনা ঘটানো হতে পারে। তাই বিষয়টি তারা গুরুত্বের সাথে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান ঘটনার সত্যাতা স্বীকার বলেন, পুলিশ সুপার আল বেলী আফিফা, সিআইডি’র পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, ডিবি পুলিশ ও সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। তবে এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর পক্ষ থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

অভিযুক্ত শাহীন মুন্সি বলেছেন, শারমিনের বাবা কালু মুন্সী আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর কালু মুন্সি জেলে রয়েছেন। তার জামিন হচ্ছে না। আমাদের ফাঁসাতে তারা এসিড নিক্ষেপের নাটক সাজিয়েছে। এ ঘটনা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানিনা। তাদের সঙ্গে আমাদের বসতবাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ ছিল। আমাদের বিরুদ্ধে তারা এ নিয়ে দশটি মামলা করেছে। প্রত্যেক মামলায় তারা পরাজিত হয়েছে। ধর্ষণ ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারা এসিড নিক্ষেপের ঘটনা সাজিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা আমাদের হয়রানি করার চেষ্টা করছে।

(টিবি/এসপি/এপ্রিল ১৮, ২০২৪)