রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : শনিবার ফরিদপুরে জেলা সামাজিক-সম্প্রীতি রক্ষা কমিটির বিশেষ সভা ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি। সভায় অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদ ওরফে এ কে আজাদ, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য মিসেস ঝর্ণা হাসান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু.আ.হামিদ সিদ্দিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি বশিরুল আলম, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম, র‍্যাব ফরিদপুর ক্যাম্প অধিনায়ক লে. কমান্ডার কেএম সাইখ আখতার, বিজিবি'র মেজর বদরুল হুদা, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী বাকাহীদ, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ রমা সাহা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইয়াছিন কবীর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট বদিউজ্জামাল বাবুল, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, শিক্ষাবিদ প্রফেসর শাহজাহান, ফরিদপুর জেলা ইমাম কল্যান ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসমাইল হোসেন, রাশিন এর নির্বাহী পরিচালক আসমা আক্তার মুক্তা প্রমুখ।

সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালি থানার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী কালি মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাসহ পরবর্তী সহিংসতায় দুইজনের মৃত্যু সংক্রান্ত জেলা সামাজিক-সম্প্রীতি কমিটির এই বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তারা গত বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল মধুখালি থানাধীন ডুমাইন ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের পঞ্চপল্লী কালি মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনাসহ পরবর্তী সহিংসতায় দুইজনের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।

সভায় ইমাম কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ বলেন, 'শুধুমাত্র সন্দেহের বশবর্তী হয়ে দুইজন মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে বলেও সতর্ক করেন তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় তার বক্তব্যে বলেন , 'জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মভূমি ফরিদপুরে এ ধরনের ঘটনা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্যে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সাথে সমন্বয় করে সভা সমাবেশ করার ব্যবস্থা করতে হবে। আলেম সমাজের নেতৃবৃন্দ এই ঘটনায় দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

পাশাপাশি সনাতন ধর্মের দায়িত্বশীল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ যথাযথ ভূমিকা পালন করেছেন। ন্যায় বিচারের লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। দোষী ব্যক্তি যে ধর্মের হোক না কেন তাকে কোন ভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদের কাছে ধর্ম কোন বিবেচ্য বিষয় নয়, বিবেচ্য বিষয় হলো তার অপরাধ। ফরিদপুরসহ দেশের কোথাও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেওয়া হবে না।' 'আমাদেরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে এসব বিষয়ে পোস্ট দেওয়া এবং অন্যের পোস্টে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্যে সতর্ক থাকতে হবে' বলেও জানান মন্ত্রী।

(আরআর/এএস/এপ্রিল ২১, ২০২৪)