স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মিশনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি ছয়জনের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী (মাস্টারমাইণ্ড) হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। শাহীনকে নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা কৌতূহল। তিনি এমপি আনারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহিদুজ্জামান সেলিমের ছোট ভাই। অগাধ অর্থবিত্তের মালিক শাহীন এলাকায় সবার কাছে এক রহস্য চরিত্র।

শাহীনরা তিন ভাই ও দুই বোন। কোটচাঁদপুর থেকে এইচএসসি শেষ করে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে মেরি নটিক্যাল পদে কয়েকবছর চাকরি করে শাহীন।

মেজো ভাই প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হওয়ার পর শাহীনকে নিয়ে যান। এর পরই অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন শাহীন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও নিয়মিত দেশে আসতেন। এক পর্যায়ে জড়িয়ে পড়েন চোরাচালানে। অবৈধ এ ব্যবসার ফলে বাংলাদেশ ও ভারতে গড়ে তোলেন সাম্রাজ্য। শাহীন কোটচাঁদপুরের গ্রামের বাড়ি এলাঙ্গী এলাকায় গড়ে তুলেছেন বিশালবহুল বাগানবাড়ি। সুউচ্চ প্রাচীরঘেরা ও সার্বক্ষণিক কড়া পাহারায় থাকা বাড়িতে প্রায়ই অতিথি হয়ে আসেন পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তাসহ অনেকে।

স্থানীরা জানান, শাহীন নিজেই এলাকায় সালিশ-দরবার করতেন। সেখানে তাঁর রায়ই চূড়ান্ত হতো। কেউ বিরোধিতা করলে পুলিশ দিয়ে তাদেরকে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে। তবে শাহীন এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে থানা-পুলিশে অভিযোগ দিয়ে কোনো লাভ হতো না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোটচাঁদপুর এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, শাহীন গত দেড় যুগে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এসব সম্পদের উৎস বা তার বৈধ ব্যবসা কী, সে সম্পর্কে কেউই কিছু বলতে পারেননি।

স্থানীয়রা আরও জানান, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে শাহীনের নাম উঠে আসায় অবাক হননি তারা। কারণ কোটচাঁদপুরে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের স্ট্যাণ্ড দখল নিয়ে বছর তিনেক আগে তাঁর অনুসারীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে শাহীনের নামে অভিযোগ হলেও সহজে পার পেয়ে যান তিনি। অবশ্য কোটচাঁদপুর থানা সূত্রেট দাবি, আখতারুজ্জামান শাহীনের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই।

তবে এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুরের পৌর মেয়র শহিদুজ্জমান সেলিম বলেন, এমিপ আনার সাহেবের হত্যাকাণ্ডের সাথে আমার ভাই জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

(একে/এসপি/মে ২৩, ২০২৪)