নাটোর প্রতিনিধি : দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সড়ক দূর্ঘটনা নাটোরের বড়াইগ্রাম ট্রাজেডির বৃহস্পতিবার এক মাস পূর্ণ হয়েছে। অক্টোবর মাসের ২০ তারিখ বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের বড়াইগ্রাম এলাকার রেজুর মোড়ে সংঘটিত দূর্ঘটনায় ৩৬ যাত্রী নিহত অন্তত ৬৭ যাত্রী আহত হয়।

ঘটনায় তদন্ত কমিটি দূর্ঘটনার কারণ হিসাবে অথৈ, কেয়া ও হানিফ পরিবহনকে অভিযুক্ত করে। অথৈ পরিবহনের চালক আলমগীর ঘটনাস্থলেই নিহত হন, কেয়া পরিবহনের চালক নাজিম উদ্দিনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটক করা হয়েছে।

অপরদিকে অভিযুক্ত হানিফ পরিবহনের বাস ও চালককে এক মাসেও আটক করা যায়নি। তবে ফিটনেসবিহীন যান ও লাইসেন্সাবিহীন চালকের বিরুদ্ধে অভিযানে বড়াইগ্রামে হানিফ পরিবহনের ২৭টিসহ ৩১১ মামলা এবং তিন লাখ ৬ হাজার ৮৫০ পঞ্চাশ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল বাছেদ জানান, দূর্ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। ইতিমধ্যে কেয়া পরিবহনের চালক নাজিম উদ্দিনসহ ২৬ জন যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীর স্বাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। হানিফ পরিবহনের বাসের নম্বর ও চালকের নাম ঠিকানা সনাক্ত করা হয়েছে। ঠিকানা যাচাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয়েছে। থানা থেকে তথ্য পাওয়া মাত্র চালককে আটক করা হবে।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার অপর উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিকুঞ্জ সরকার জানান, ইউএনও শরীফুন্নেসার নেতৃত্বে ১০৭টি মামলা এবং ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ নেওয়াজের নেতৃত্বে ৯৫টি মামলা এবং ৯৮ হাজার ৯৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

অপরদিকে বড়াইগ্রাম থানা ও বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশ ১৪৭টি গাড়ীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া দুই শতাধিক ভুটভুটির ফিতা কেটে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, অভিযানে শুধু হানিফ পরিবহনকে ২২টি মামলা এবং প্রায় এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, সড়কে অভিযান শুরু হলেই হানিফ পরিবহন উধাও হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দূর্ঘটনার চতুর্থ দিনে নিহত ৩৫ জন যাত্রীর পরিবারের হাতে সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজ হাতে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এক লাখ টাকা করে অনুদানের চেক তুলে দেন। গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি নির্ধারিত তিন দিনেই প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই প্রতিবেদনে দূর্ঘটনার কারণ উল্লেখসহ ১৭টি সুপারিশ করেন। তার আলোকেই ১০ নভেম্বর দেশব্যাপি শুরু হয়েছে ফিটনেস বিহীন যান ও লাইসেন্স বিহীন চালকের বিরুদ্ধে অভিযান।

বড়াইগ্রামের ইউএনও শরীফুন্নেসা বলেন, রেজুর মোড়ের দূর্ঘটনায় হতা-হতদের পরিবারসহ সকল বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে। আর অন্যান্য স্থানের তুলনায় বড়াইগ্রামে ফিটনেসবিহীন যান ও লাইসেন্সাবিহীন চালকের বিরুদ্ধে অভিযান বেশী পরিমানে করা হচ্ছে।

(এমআর/এসসি/নভেম্বর২০,২০১৪)