নোয়াখালী প্রতিনিধি : কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প সরিয়ে নোয়াখালীর চরে স্থানান্তরের বিষয়ে সরকারের উর্ধ্বনতন মহলের উদ্যোগে জেলার সর্বমহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে এ সংবাদ প্রকাশিত হবার পর জেলাজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন সংগঠন থেকে এ উদ্যোগের প্রতিবাদ, নিন্দা ও তা  বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।

হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিম, জেলা সদরের সাবেক সংসদ ফজলে এলাহী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিলন, নাগরিক কমিটি আহবায়ক মিয়া মো: শাহাজাহান, খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমদাদ হোসেন কৈশোর, তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির জেলা আহ্বায়ক আনম জাহের উদ্দিন ও বাসদের জেলা সদস্য সচিব দলিলুর রহমান দুলালসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এ জেলায় স্থানান্তর করা হলে সামাজিক অস্থিরতা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। শান্তির জেলা নোয়াখালী অশান্ত হয়ে পড়বে। মাদক, অস্ত্র ও চোরা কারবারীর স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে এ জেলা।

এমনি চরাঞ্চলে বিগত বছরগুলোতে বন ও জলদস্যুদের উৎপাতে স্থানীয় অধিবাসিরা অতিষ্ট ছিল। সর্বদলীয়ভাবে দস্যুদের দমন করার পর চরাঞ্চলের পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হয়েছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গাদের এখানে পুর্নবাসন করা হলে হাঙ্গামা সৃষ্টি হবে। সরকার এ সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে জেলাবাসী তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবে বলেও হুশিয়ারি করেন। তারা আরও বলেছেন নোয়াখালীর উপকূলীয় চরাাঞ্চলে লক্ষাধিক ভূমিহীন পরিবার সরকারি খাস ভূমিতে বসবাস করছে। তাদেরকে এখনও পুর্নবাসন না করে উল্টো রোহিঙ্গাদের পুর্নবাসনের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারবে না ভূমিহীনরাও। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে এ উপকূলীয় চরাঞ্চলে ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামার সম্ভাবনা দেখা দিবে। এমনি সেনাবাহিনীকে হাতিয়ার চরে ভূমি বরাদ্দ দেয়ায় ভূমিহীনদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে। তার মধ্যে রহিঙ্গাদের পুর্নবাসন একটি হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে তারা মত প্রকাশ করেন।

বন বিভাগের প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার একর বনভূমি ছিল। বর্তমানে ২ লাখ একর ভূমিতে বনায়ন রয়েছে, এর মধ্যে ৭২ হাজার সংরক্ষিত বনায়ন। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে ৭৩ হাজার একর ভূমি হস্তান্তর করা হয়েছে। এখানে সুবর্ণচরে অর্থনৈতিক জোন করার জন্য সরকার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া জেলার দক্ষিনাঞ্চল দেশের শষ্য ভান্ডারের অন্যতম। এ চরে ব্যাপকভাবে মৎস্য চাষ হচ্ছে। সরকারি উল্লেখিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে ব্যাপকভাবে বন নিধন হবে, সরকারি সম্পত্তি, মৎস্য ও শষ্য ভান্ডারের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।

(জেএইচবি/এএস/নভেম্বর ২০, ২০১৪)