মিশুক আহমেদ জয়, কুষ্টিয়া : বাসাবাড়িতে কাজের কথা বলে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে গুম করার অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ও তার স্ত্রী সাম্মীয়ারা পারভীনের বিরুদ্ধে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

আতাউর রহমান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই।

ভুক্তভোগী কিশোরীর নাম সুখিলা (১৩)। সে কুষ্টিয়া সদরের জিকে ঘাট এলাকার মো. হৃদয়ের মেয়ে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আনুমানিক দেড় বছর আগে সুখিলা নামের কিশোরীকে বিবাদীরা মাসিক পাঁচ হাজার টাকা বেতনে তাদের বাসায় বাচ্চাকে দেখভাল করার জন্য গৃহপরিচারিকা হিসেবে রাখেন। কিন্তু তাদের বাসায় নেওয়ার পর ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া তার নাম পরিবর্তন করে আফরিন রাখেন তারা। ভুক্তভোগী কিশোরীকে মাঝে মাঝেই শারীরিক নির্যাতন করা হতো। এসব তাদের ঢাকার বাসায় গিয়ে নিজ চোখে দেখলেও বিবাদীরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ বা আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শারীরিক নির্যাতন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেই তারা কিশোরীর বাবা-মাকে জানে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিতেন। কয়েক মাস আগে কিশোরীর পরিবারকে কোনো কিছু না জানিয়ে তাদের ঢাকার বাসায় নিয়ে যান। এরপর থেকে ৫-৬ মাস ধরে ওই কিশোরীর কোনো খোঁজ নেই জানিয়ে মডেল থানায় অভিযোগ করে কিশোরীর পরিবার।

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, আমরা ধারণা করছি তাদের বাসায় কাজ করাকালীন আমার মেয়ে তাদের এমন কোনো অপকর্ম দেখে ফেলেছে অথবা জেনে গেছে, যে কারণে আমার মেয়েকে গুম করে ফেলেছে অথবা আমার মেয়েকে হত্যা করে আমাদের সঙ্গে টালবাহানা করছে।

আতাউর রহমান আতা ও তার স্ত্রী সাম্মীয়ারা পারভীনের বিরুদ্ধে দুদকে দুর্নীতির মামলাসহ কুষ্টিয়া মডেল থানায় একাধিক হত্যা মামলা করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ও তার স্ত্রী সাম্মীয়ারা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে আওয়ামী সরকারের পতন হলে কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক এমপি মাহবুব উল আলম হানিফ ও তার চাচাতো ভাই কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা বাড়িঘর ছেড়ে সপরিবারে গা ঢাকা দেন। এমনকি তাদের গাড়িচালক, কাজের লোকসহ ঘনিষ্ঠ লোক আত্মগোপনে চলে যান।

(এমএজে/এএস/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৪)