কেন্দুয়ায় ১০৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, সাবেক মেয়র গ্রেফতার
সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : তেরো বছর আগে ভোট কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দেওয়ার পর বিসমিল্লাহ টেড্রাসে গিয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপারেটর অভিযোগ এনে কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র আসাদুল হক ভূঞাসহ আওয়ামীলীগের ১০৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রামের আব্দুুল মোমেন কাদেরীর ছেলে মো: আতাউর রহমান কাদেরী বাদী হয়ে বৃপস্পতিবার কেন্দুয়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে দাবি করা হয় ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। পৌরশহরের সায়মা শাহজাহান একাডেমী কেন্দ্রে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপি নেতা মো: দেলোয়ার হোসেন ভূঞা দুলালের নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আতাউর রহমান কাদেরী। আতাউর রহমান কাদেরী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল কেন্দুয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ওই দিন ২ টা থেকে ৩ টার মধ্যে মামলার প্রধান আসামী উপজেলা আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আসাদুল হক ভূঞার নেতৃত্বে একদল লোক তাকে ভোট কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দেয়। পরে তিনি অসহায় অবস্থায় সায়মা শাহজাহান একাডেমী প্রাঙ্গনের মাঠে অবস্থান করতে থাকেন।
এসময় আসাদুল হক ভূঞা তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাতারি আঘাত করে তার একটি পা ভেঙ্গে দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া নতুন বাসষ্ট্যান্ডে আতাউরের মেসাস বিসমিল্লাহ টেড্রাস নামক রোড সিমেন্টের দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়েও সকল আসামী সহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনের একটি দল লোহার রড়, হকিস্টিক ও বিস্ফোরক দ্রব্যের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দোকানের ভিতর প্রবেশ করে। এসময় তারা নগদ আড়াই লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
এছাড়া দোকানের সামনে আতাউরের ক্রয়কৃত একটি ১৫০ সিসি লাল রঙের বাজাজ মোটর সাইকেলসহ সিমেন্টের বস্তা, কোম্পানির বিভিন্ন সুতার অনুমান ১০ টন লোহার রড সহ প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। আতাউর রহমান কাদেরী বলেন, দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকা কালে থানায় গিয়ে এ মামলা করার একেবারেই কোন সুযোগ পাননি। বর্তমানে পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করায় তিনি এ মামলা করতে পেরেছেন।
কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, বাদীর লিখিত এজাহারের ভিত্তিতে এজাহার নামীয় ১০৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পৌরসভার সাবেক মেয়র আসাদুল গ্রেফতার কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র মো: আসাদুল হক ভূঞাকে রাজধানী ঢাকা থেকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করে র্যাব-১৪ সদস্যরা। তারা গ্রেফতারের পর আসাদুল হক ভূঞাকে রাতেই কেন্দুয়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কেন্দুয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর কাইউম বলেন, সাবেক পৌর মেয়র আসাদুল হক ভূঞাকে কেন্দুয়া থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে আদালতে তাকে রিমান্ডের জন্য কোন আবেদন করা হয়নি। পরে আদালত আসাদুল হক ভূঞার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
(এসবিএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৪)