নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি

রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি স্বাধিকার আন্দোলনের অংশগ্রহণ করা এই ছাত্র সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রজ্ঞাপন জারির কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞার এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা প্রথমেই ছাত্রলীগের ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘৫২'র ভাষা আন্দোলন, ৬২'র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬'র ছয়দফা, ৬৯'র গণঅভ্যুত্থান, ৭১'র মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব ও আত্মদান থেকে শুরু করে পরবর্তীতে জনগণের সকল আন্দোলনেও যুগপৎ স্রষ্টা হিসেবে ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।’ ওই বিবৃতিতে তারা নিষিদ্ধ করার বিষয়টিকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক সিদ্ধান্ত’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘অবৈধ, অসাংবিধানিক, দেশবিরোধী’ উল্লেখ করে তাদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
গত জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নিজেদের ভূমিকার জন্য আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ছাত্রলীগ। আন্দোলনকারীরা আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর বর্বরোচিত হামলার অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। যদিও যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছিলেন দাবি করে ছাত্রলীগ। এ প্রসঙ্গে সংগঠনটির প্রতিক্রিয়া, ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে 'মেটিকিউলাস প্ল্যানের' অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে শিক্ষার্থীদের বিপরীতে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী ও রাষ্ট্রবিরোধী কুচক্রী স্বার্থান্বেষী মহল।’
অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের ‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে দাবি করে ওই বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, ‘আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যর্থতা লুকানোর জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ও অসাংবিধানিক সরকার।’
এদিকে, নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত আসার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ‘এই সরকারের হাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী এবং পুলিশের রক্তের দাগ লেগে রয়েছে। নিজেদের গণহত্যার দায় আমাদের ওপরে চাপানোর জন্যেই এই সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছে।’ এদিকে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টির পক্ষে-বিপক্ষে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
(আরআর/এএস/অক্টোবর ২৪, ২০২৪)