গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা ও পৃথিবী থেকে অশুভ অন্ধকার দূর করতে গোপালগঞ্জে শ্মশান দিপাবলী (আলোর উৎসব) উদযাপন করা হয়েছে। প্রদীপ প্রজ্জলন, আলোকসজ্জা, সৌন্দর্য বর্ধণ শাস্ত্র পাঠ, পূজা অর্চনা এবং ভক্তিগীতির আয়োজন ছিল এ উৎসবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এতে অংশ নিয়ে প্রয়াতের জন্য প্রার্থনা করেন ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে গোপালগঞ্জ পৌর শ্মশানে এ উৎসবের অযোজন করে শ্মশান সংরক্ষণ কমিটি।

সন্ধ্যার আগেই সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আসেন শ্মশানে। তারা প্রয়াত স্বজনদের সমাধি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করেন । পরে বর্ণিল সাজে সাজান সমাধিসৌধ। প্রয়াতের উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন নানা উপাচার। এরপর প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় দিপাবলী (আলোর উৎসব)। আগতদের অনেকেই স্বজনদের সমাধিতে মোমবাতি, প্রদীপ ও ধূপ কাঠি প্রজ্বালন করেন। রাতের শ্মশান সেজে ওঠে আলোয় আলোয়।তারা মন্ত্র উচ্চারন করে প্রার্থনা করেন স্বর্গত স্বজনদের জন্য। তাদের কথা স্মরণ করে করেন অশ্রুপাত।

এছাড়ার শ্মশান কমিটির পক্ষ থেকে শ্মশানের কালি, শিব মন্ডপ সহ অন্যান্য মন্ডপ, বিশ্রমাগার, মুক্তি ধাম, সড়ক সহ সব স্থাপনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বল করা হয় । পুরো শ্মশানকে অলোকের ঝর্না ধারায় উদ্ভাসিত করা হয়। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও শোভাবর্ধনের কাজ আগেই সম্পন্ন করা হয় কমিটির পক্ষ থেকে।

অলোর উৎসবে অংশ নেওয়া স্বাগতা দাস (২২) বলেন, প্রয়াতদের আত্মার শান্তি কামনায় এ উৎসবে অংশ নিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেছি। প্রার্থনা করেছি। এই আলো দিয়ে পৃথিবী থেকে অশুভ অন্ধকার দূর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি। শ্মশানের পূজায় আংশ নিয়ে বিশ্ব শান্তির প্রত্যাশা করেছি।

শ্মশান কালি মন্ডপের সেবাইত চন্ডি দাস বিশ্বাস (৬৫) বলেন, গত ৪০ বছর ধরে আমি শ্মশান মন্ডপের সেবাইতের কাজ করছি। ৩৫ বছর ধরে এখানে শ্মশান দিপাবলী অনুষ্ঠিত হচ্চে। আমরা এ উৎসবে মিলিত হয়ে প্রয়াতের জন্য প্রার্থনা করি।মায়ের কাছে সকল অন্ধকার থেকে মুক্তি চাই। সেই সাথে দেশ, জাতি ও বিশ্বের সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি কামনা করেছি।

শ্মশান কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার সাহা দীপু বলেন, শ্মশানে ৩৫ বছর ধরে দিপাবলী উৎসব হচ্ছে। বিগত ৫/৬ বছর ধরে এখানে ব্যতিক্রমী ও বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হচ্ছে। এ আযোজনের মধ্যে দিয়ে আগতরা প্রয়াত স্বজনদের জন্য প্রার্থনা করছেন । শাস্ত্রপাঠ, পূজা সহ সব অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন । ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে শ্মশান দিপাবলী প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে । জেলাবাসীর সহযোগিতায় আগামীতে এ উৎসবকে আরো বর্ণিল করে উদযাপনের প্রত্যাশা করছি।

(এমএস/এএস/অক্টোবর ৩১, ২০২৪)