মৌলভীবাজারে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে নাগরিকদের মানববন্ধন

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আশরাফ উদ্দিন আহমদের উপর মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দাবি করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন স্থানীয় নাগরিকরা।
গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নাজিরাবাদ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর বাজারে ইউনিয়নের সাধারণ নাগরিকদের ব্যানারে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এতে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ অংশ নেন। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলে এই প্রতিবাদ সভা।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুস সুবহান মাস্টারের সভাপতিত্বে ও ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, বিএনপি নেতা পাবলু আহমদ মিজু, দশকাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান, চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন এর বড় ভাই মো: নাসির উদ্দিন, সাবেক ইউপি সদস্য হুমায়ুন আহমদ সহ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরাও বক্তব্য রাখেন।
ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন ইউনিয়নের যেকোন ব্যক্তি হয়রানি অথবা অন্যায়ের শিকার হলে তার পাশে থাকতেন। তিনি উপস্থিত জনগণের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, সদর উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে বিভিন্ন ধরণের মামলা চলমান থাকলেও আমাদের নাজিরাবাদ ইউনিয়নে কোন মামলা নেই, তার কারণ আমাদের চেয়ারম্যান চাননা এই ইউনিয়নে কেউ মামলায় জর্জরিত হয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হোক।
তিনি বলেন, সেদিন সাবেক চেয়ারম্যান-মেম্বার সহ স্থানীয় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে চোর প্রমাণিত করে বিচার করেছেন তিনি। এখন তিনি নিজেই প্রতারণার শিকার। এই বিচারে আমি সহ আরও অনেকে ছিলেন। আমাদের কেন মামলায় আসামি করা হলোনা। তাহলে আমাদের বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন কেন মামলার আসামী। কাজেই এই মামলা মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক।
মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, আমরা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করি গ্রাম-আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য। আপনারা জেনেছেন সেখানে সঠিকভাবে গ্রাম-আদালতে চুরির বিচার হয়েছে। সেখানে স্বাক্ষ্য প্রমানে সে চোর হয়েছে, এটার জন্য কী চেয়ারম্যান দায়ী?
উল্লেখ্য, গত ২ নভেম্বর নাজিরাবাদ ইউনিয়নে গরু চুরি সংক্রান্ত শালিস বৈঠক হয়। বৈঠকে বর্তমান চেয়ারম্যান ছাড়াও নাজিরাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান-মেম্বার,মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান-মেম্বার সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে আটঘর (মাঝপাড়া) গ্রামের ধন খা’র ছেলে আারব খান-কে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বিচারে চোর সাব্যস্ত করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। শালিশের পরদিন ভোরে আরব খা’র পিতা ধন খা প্রতিবেশি ইউসুফ মিয়ার বাড়ির পাশে কাঠালগাছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। ওই ঘটনায় আরব খা ইউসুফ মিয়া সহ মোট ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আজ্ঞাত ২ থেকে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আশরাফ উদ্দিনকে ৬ নং আসামী করা হয়। এর পর গত ২১ নভেম্বর রাতে ঢাকা থেকে চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন সহ ৫জনকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩ এর একটি দল। পরদিন ২২ নভেম্বর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় তাকে।
(একে/এসপি/নভেম্বর ২৮, ২০২৪)