গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : মধুমতি নদীর বিলরুট চ্যানেলের ভাঙন থেকে সড়ক, বাজার ও স্থাপনা রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা প্রকল্প গ্রহন করে সরকার। এ প্রকল্পের কাজ ২ মাস আগে শুরু হয়েছে। ইতিমেধ্যে ডাম্পিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু নদী ভাঙন এলাকায় অবৈধ স্থাপনার কারণে সিসি ব্লক স্থাপনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ না হলে বর্ষা সৌসুমে ভাঙনের কবলে পড়ে সড়কসহ অন্যান্য স্থাপনা বিলীনের আশংকা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের নির্বার্হী প্রকৌশলী এস.এম রেফাত জামিল বলেন, গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুরে মধুমতি নদীর বিলরুট চ্যানেলে ২৫০ মিটার এলাক জুড়ে অনেক আগে ভাঙন দেখা দেয়। এতে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়ক, মঞ্জুরুল হক খান কলেজ, মসজিদ, উলপুর বাজার, বজারের বেশ কিছু বাণিজ্যিক ভবন হুমকির মুখে পড়ে। সরকার এসব রক্ষায় প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী প্রতিরক্ষা প্রকল্প গ্রহন করে।দরপত্র আহবান শেষে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেখানে কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ডাম্পিংএর কাজ শেষ হয়েছে।নদী ভাঙন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।

এ কারণে সিসি ব্লক স্থাপন করা যাচ্ছে না।নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ না হলে বর্ষা সৌসুমে ভাঙনের কবলে পড়তে পারে সড়কসহ অন্যান্য স্থাপনা। তাই আমরা সেখান থেকে ৫০টি অবৈধ স্থাপনাকে সরিয়ে নিতে নোটিশ করেছি। কেউ, কেউ অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে। অধিকাংশ স্থাপনা এখনো রয়ে গেছে। এগুলো আপসারণের জন্য জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছি। দ্রুত ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে আমরা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করব ।তারপর কাজটি সম্পন্ন করা হবে।

অবৈধ স্থাপনায় ওষুধ ব্যবসা পরিচালনাকারী সুকুমার বিশ্বাস বলেন, আমাদের ২/৩ বরে মৌখিখভাবে দোকান সরিয়ে নিতে বলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পরে নোটিশও দিয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পর পাকা অংশ ভেঙে দিয়েছি।পাকা অংশের সামনে অস্থায়ী টিসেন ঘরে ব্যবসা করছি।৮ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি।তাই আমাদের পুনর্বাস করার দাবি জানাচ্ছি। পুনর্বাস করা হলে ছেলে-মেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে পারব।

অবৈধ স্থাপনার মালিক মোঃ মিন্টু শেখ বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যতটুকু ছেড়ে দিতে বলেছে, আমি ততটুকু ছেড়ে দিচ্ছি।উচ্ছেদের আগেই সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছি।

অবৈধ স্থাপনায় মুদি দোকান পরিচালনাকারী তনু বলেন, নোটিশ পেয়েছি। কিন্তু কোথায় যাব। যাওয়ার জায়গা নেই। আমাদের জায়গার ব্যবস্থা করে দিলে দোকান সরিয়ে নেব।

উলপুর বাজারে ব্যবসায়ী ও ইউপি মেম্বর মনির হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে কেউ কেউ অবৈধ স্থাপনা সরিয়েছে।অনেকের স্থাপনা রয়ে গেছে।সরকার এখানে নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ শুরু করেছে। বাজার, সড়কসহ স্থাপনা নদী ভাঙন থেকে রক্ষায় আমরা এ কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।

স্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজের ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠান বেনজীর কনস্ট্রাকনের সাইড ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম নবী বলেন, পাকা ভবন নির্মাণ করে নদীর পাড় অবৈধ ভাবে দখল করা হয়েছে। এ কারণে সেখানে সিসি ব্লক স্থাপনের কাজ করা যাচ্ছে না। তাই অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। যত দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে,তত দ্রুত এ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

(এমএস/এএস/ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪)