শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে পোস্ট মাস্টার আব্দুল মতিন-কে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম হাসান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রধান ডাকঘর এর পোস্ট মাস্টার পদে কর্মরত আব্দুল মতিন (৪৫) গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, গত ২৫ অক্টোবর সিরাজুল ইসলাম হাসান নামে এক ব্যক্তি আমার বাসায় এসে আলাপচারিতায় এক পর্যায়ে আমাকে বলেন, আপনি শ্রীমঙ্গলে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন। আপনার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। আমি সাংবাদিক হিসেবে আপনার বিষয়ে অনুসন্ধান করতে চাই। আপনি শ্রীমঙ্গলসহ আপনার মূল বাড়ি চুনারুঘাট এলাকায় জমি-বাড়িসহ অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। আপনি যদি চান তাহলে আমি নিউজ প্রকাশ করবো না। তবে শর্ত হচ্ছে আমাকে খুশি করতে হবে। এসময় আমি বলি আমি যদি অবৈধ ভাবে অঢেল সম্পদ বানিয়ে থাকি তাহলে আপনি আমার বিরুদ্ধে নিউজ করতে পারেন। এই কথা শুনে সিরাজুল ইসলাম হাসান আমার বাসা থেকে বের হয়ে যান। কয়েকদিন পর শুনতে পারি আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।

আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে করা মামলায় বলা হয়, আব্দুল মতিন এবং আরও কয়েকজন ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে সিরাজুল ইসলামকে হুমকি দিয়েছেন এবং তার সাংবাদিকতা কার্যক্রমে বাধা দিয়েছেন।

এছাড়া, মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, ২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর ও ২৬ অক্টোবর দুইটি পৃথক ঘটনায় তাকে শারীরিক ও মানসিক হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আব্দুল মতিন তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি সরকারি চাকুরির পাশাপাশি ব্যক্তিগত ব্যবসা বানিজ্য করে সম্মানের সাহিত বসবাস করে আসছি। একটি কুচক্রী মহল আমার চাকুরীতে ব্যঘাত ঘটাতে ও সামাজিক ভাবে সম্মান হানী করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার করে আসছে।

তিনি বলেন, "এটি একটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক মামলা। আমি পোস্টমাস্টার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছি। সিরাজুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং আমার সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে এ মামলা করেছেন। তার দাবি, তিনি চাঁদা চেয়েছিলেন, যা আমি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে এই ভিত্তিহীন অভিযোগ আনেন।"

তিনি আরও জানান, "আমি সব সময় আইন মেনে চলেছি। আমার বিরুদ্ধে আনা প্রতিটি অভিযোগ অসত্য। আমার সততা এবং ন্যায়পরায়ণতা প্রশ্নবিদ্ধ করার এটি একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।"

মামলাকারী সিরাজুল ইসলাম তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি আব্দুল মতিনের সাথে তার সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে ফোনে হুমকি পান এবং পরে দলবদ্ধভাবে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। তিনি আরও দাবি করেন, তার মানহানির উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিভিন্ন পোস্ট করা হয়েছে।

স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ মনে করেন এটি একটি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের ফল, যা আদালতের মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত। অন্যদিকে, অনেকে আব্দুল মতিনের পক্ষে কথা বলে তাকে একজন সৎ এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মামলাকারী সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম হাসান বলেন, আমি নিউজের জন্য তথ্য জানতে চাইলে আমাকে আব্দুল মতিন মোবাইল ফোনে হুমকি প্রদান করে, আমার মোবাইল ফোনে সব রেকর্ড রয়েছে। সে আমাকে মারধোর করেছে আমার পক্ষে অনেকজন সাক্ষী রয়েছে। সময়মতো সব কিছু উপস্থাপন করবো।

(এএ/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০২৫)