রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শহীদ স্মৃতি কলেজের শিক্ষক প্রণব ঘোষ বাবলুকে একটি চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সকালে তাকে তার কর্মস্থল তালা উপজেলা সদরের শহীদ স্মৃতি কলেজের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত প্রণব ঘোষ বাবলু তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি গ্রামের মৃত বিকাশ চন্দ্র ঘোষের ছেলে।

এদিকে সদর থানার বালিয়াডাঙা গ্রামের ছাত্রদল কর্মী মাহামুদুল হাসানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় প্রণব ঘোষ বাবলুকে সোমবার গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহিনুর রহমান জানান, গত বছরের ১১ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জালালপুর পশুর হাটে খাস কালেকশান বন্ধ না করলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন রবিউল ইসলাম মুক্তিসহ তার লেঅকজন। পরবর্তীতে ২৩ এপ্রিল খাস কালেকশনের এক লাখ ৭৬ হাজার ২০৫ টাকাসহ ১৮ লাখ ২৬ হাজার ২৪০ টাকা লুটপাটের অভিযোগে তৎকালির জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম লিটুর পক্ষে জেঠুয়া গ্রামের ইমান আলীর ছেলে আলম সরদার বাদি হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭০/৮০ জনের নামে গত বছরের ২৭ নভেম্বর তালা থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামী হিসেবে সোমবার সকাল ১০টার দিকে শহীদ স্মৃািত কলেজের সামনে থেকে প্রণব ঘোষ বাবলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, তালা থানার চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তারকৃত তালা উপজেলার খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলুকে সদর উপজেলার বালিয়াডাঙা গ্রামের ছাত্রদল কর্মী মাহামুদুল হাসান হত্যা মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য সোমবার আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের জন্য ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল চারটার দিকে কদমতলা বাজার থেকে সিটি কলেজের মোড়ে মিছিল যাওয়ার সময় মিছিলে ইট পাটকেল ও গুলি ছোঁড়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা। এ সময় একটি গুলি মাহামুদুল হাসানের বুকে লেগে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। মাহামুদুল হাসান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মৃত্যুবরণ করলে একটি ভ্যানে করে তার বাড়িতে লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন বালিয়াডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নামাজে জানাজা শেষে বাদ জুম্মা পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় সুবিধাজনক সময় হিসেবে মাহামুদুল হাসানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার আমলী প্রথম আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। মামলায় তৎকালিন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৮০ জনকে আসামী করা হয়। এ মামলায় সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে প্রণব ঘোষ বাবলুকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য সোমবার বিকেলে আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫)