রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর থানায় কর্মরত কনস্টেবল সোহাগ আলী বিদ্যুতায়িত হয়ে ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিট এ- প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তবে তিনি কিভাবে বিদ্যুতায়িত হলেন তার কোন ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

কনস্টেবল সোহাগ আলী চুয়াডাঙা জেলা সদরের ঝিনাইদহ বাসস্টা-পাড়ার অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিনের ছেলে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মাহাফুজ আলম জানানা, সোমবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে দৌড়ে জরুরী বিভাগে আসে সোহাগ নামের এক কনস্টেবল। তখন তার জামা প্যান্টে পোড়ার গন্ধ বের হচ্ছিল। সারা শরীরে তার চামড়া উঠে গেছে। শিরাগুলো কালো হয়ে গেছে। নিজেকে সদর থানার কনস্টেবল পরিচয় দিয়ে বলে, তার বাংলাদেশ পুলিশের কং নং-৫১০। তবে কিভাবে তিনি বিদ্যুতায়িত হয়েছেন তা তিনি বলতে পারেননি। তার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুঁটে আসেন। তাই তাকে ভর্তি না করিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিটে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। সোহাগকে ভর্তির সময় পুলিশ কেস হিসেবে এন্ট্রি করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল মধুমোল্লারডাঙির বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ও সাহাবুদ্দিন গাজীসহ কয়েকজন জানান. ওয়াজেদ সরদার ও তার ভাইদের একটি পুকুর কিনে তার ভরাট করে নেন পাওয়ার হাউজের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা মেছো সাত্তার। সোমবার সন্ধ্যা থেকে মেছো সাত্তারের পুকুট ভরাটি জমিতে ওয়াজ মহাফিল শুরু হয়। ওই মাহফিলে প্রধান বক্তা ছিলেন তারেক মনোয়র।

সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, সোহাগ সোমবার রাতে মধুমোল্লারডাঙিতে অনুষ্ঠিত ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার জন্য থানা থেকে বের হয়ে যায়। সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করে জানানো হয় যেয়ে সোহাগ বিদ্যুতায়িত হয়ে নিজেই হাসপাতালে চলে এসেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুঁটে যান। সেখানে সোহাগের শরীরে বিদ্যুতায়িত হয়ে অনেকাংশেই পুড়ে গেছে বলে জানতে পারেন। তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিট এ- প্লাস্টিক সার্জারীতে ভর্তি করানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে সোগাগের বিদ্যুতায়িত হওয়ার ব্যাপারে তদন্ত চলছে। সোহাগ ভালভাবে কথা বলতে পারলে রহস্য উন্নোচন সহজ হতো।

যশোর জেলার অভয়নগর থানাধীন একটি ফাঁড়িতে কর্মরত কনস্টেবল মাসুদুর রহমান জানান, তার ভাই সোহাগ আলী মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে ঢাকা জাতীয় বার্ণ ইউনিট এ- প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের নিবিড় পর্যক্ষেণ ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তবে তার অবস্থা আশঙাঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

মাসুদুর রহমান বলেন, সোহাগের শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তবে তার পরিহিত পোশাকেও আগুণ লেগে যায়। একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রিীর মাধ্যমে নিশ্চিত হন যে, এ ধরণের পোড়া কোন সাধারণ আগুনে নয়। বিদ্যুতায়িত তার জামা কাগড়ে লাগলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে না পারায় বিদ্যুতায়িত হওয়ার কারণ ও ঘটনান্থল সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে হাসপাতালের কাছাকাছি এ ধরণের ঘটনা না ঘটলে সচেতন অবস্থায় সে হাসপাতালে ছুঁটে যেতে পারতো না। তার কাছে থাকা মোবাইলটি একজন পেয়ে থানায় জমা দিয়েছেন বলে জেনেছেন। তবে তার পকেটে থাকা এটিম কার্ড ও নগদ টাকা পাওয়া যায়নি।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫)