আঞ্চলিক প্রতিনধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় মাছ চুরির সময় চোরদের দেখে ফেলায় হত্যার ভয়-ভীতির কারণে আতংকিত হয়ে আলোচিত শিশু মুন্নার মৃত্যুর ঘটনায় ডাকা সালিশ-বৈঠকে হামলা সংঘর্ষে নিহত শিশুর বাবা-মাসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

শালিশ বৈঠকে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী, আহত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাকাল গ্রামের দিনমজুর নজরুল হাওলাদার ও মারুফা বেগমের সাড়ে তিন বছরের শিমূ পুত্র মুন্নাকে ঘরে রেখে গত সোমবার সন্ধ্যায় (৩মার্চ) পুকুরের ঘাটে কাজ করতে যায় মা মারুফা বেগম। এই সুযোগে ঘরে পালিলে জিয়ানো কৈ, শিংসহ জিয়াল মাছ চুরি করে নেয় একই গ্রামের কালু খাঁনের ছেলে মাদকসেবী শাহিন খাঁন ও কমল রায়ের ছেলে মাদকসেবী কল্যাণ রায়। চুরির সময় শিশু মুন্না শাহীন ও কালুকে দেখে ফেললে মুন্নাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ভয় আর আতংকে অসুস্থ্য হয়ে পরে শিশু মুন্না। ভর্তি করা হয় মুনানাকে হাসপাতালে। পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিশু মুন্না মারা যায়। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিশুটির মরদেহ থানায় নিয়ে আসলেও বিচারের আশ্বাসে এলাকার প্রভাবশালীদের কথায় মৃত শিশুর পরিবারকে মামলা করতে না দিয়ে সালিশ মিমাংশার আশ্বাসে বাড়িতে এনে দাফন করা হয় মুন্নাকে

আশ্বাস অনুযায়ি শুক্রবার বিকেলে এলাকার প্রভাবশালীরা স্থানীয় এক বাড়িতে সালিশ বৈঠকে বসে। সালিশ বৈঠকের এক পর্যায়ে অভিযুক্ত চোরদের পক্ষ থেকে এলাকার প্রভাবশালীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার সময় ওই দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় উত্তেজনা।

সালিশ মিমাংশার শেষ পর্যায়ে অভিযুক্ত শাহিন খাঁনের স্বজন অভিযুক্ত হামলাকারী রফিকুল ইসলাম আজাদ অতর্কিত হামলা চালায় নিহত ওই শিশুর বাবা-মা সহ তদের স্বজনদের উপর। এক পর্যায়ে তা উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা সংঘর্ষে রুপ নেয়।

হামলা ও সংঘর্ষে নিহত শিশুর বাবা নজরুল হাওলাদার, মা মারুফা বেগম, অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ শিল্পী আক্তার, স্থানীয় রিদম মাহামুদসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১২ আহত আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার কথা অস্বীকার করে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন, সে কাউকে হামলা করেনি বরং তার ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর উপরপ্রতিপক্ষরা হামলা চালালে তার স্ত্রী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এছারাও তার গাড়ি ভাংচুর করেছে প্রতিপক্ষরা।

এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে চলছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন এস আই সৌমেন বিশ্বাস।

(টিবি/এসপি/মার্চ ০৮, ২০২৫)