নড়াইলে ইউপি চেয়ারম্যানের ঘেরে যেতে দুটি সেতু, এলাকাবাসীর বিস্ময় প্রকাশ

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুকের ঘেরে যেতে দুইটি সেতু (কালভার্ট) নির্মান করা হয়েছে। সরকারি অর্থে ৭০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত খামারে যাতায়াতের জন্য এই সেতু নির্মান করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলার ১২ নং বিছালী ইউনিয়নের বন খলিশাখালী এলাকায় চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুকের এস এম সিফাউল মৎস্য ও পশু খামার অবস্থিত। ঘেরে যেতে একটি খাল পার হয়ে যেতে হয়। তাই তো ঘেরে ভালোভাবে যাতায়াতের জন্য বন খলিশাখালী গ্রামের একই এলাকায় দুইটি কালভার্ট(সেতু) নির্মান করা হয়। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে সেতু দুইটি নির্মান করা হয়। প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে বন খলিশাখালী অজির এর বাড়ির সামনে খালের উপর ১১ মিটার বক্সকাল ভার্ট (সেতু)। এখানে ৪০ লক্ষ ৫০ হাজার ৭’শ ১১ টাকা প্রক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে। এই সেতুটির প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিনে এই গ্রামের সুশীল এর বাড়ির সামনে একই অর্থ বছরে খালের উপর ৭ দশমিক ৯৩ মিটার বক্সকাল ভার্ট (সেতু) নির্মান করা হয়। প্রক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ লাখ ৯৭ হাজার ৮’শ ৬০ টাকা। প্রকল্প দুইটি বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানায়, বন খলিশাখালীতে যে দুইটি সেতু নির্মান করা হয়েছে তা মূলত চেয়ারম্যানের ঘেরে যাতায়াতের জন্য তৈরী করা হয়েছে। এ সেতু দিয়ে এলাকাবাসীর কোন উপকার হয় না। চেয়ারম্যানের ঘের থেকে মাছ মেরে পিকআপ বা নছিমনে করে বাজারজাত করা ছাড়া আমাদের কোন কাজে আসে না।
সরকারি এতগুলো টাকা ব্যয় করে চেয়ারম্যানের ঘেরে যাতায়াতের সেতু নির্মান করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে তারা।
তারা জানায়,আমরা জানি চেয়ারম্যান তার ঘেরে যাতায়াতের জন্য নিজ অর্থে সেতু নির্মান করেছে। এখন জানলাম সে সরকারি টাকায় চেয়ারম্যানের ঘেরে যাতায়াতের সেতু তৈরী করা হয়েছে। তবে চেয়ারম্যানে ভয়ে কেউ নাম প্রকাশ করতে রাজি নয়।
বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুক দাবি করেন, সেতুতো আমি করিনি সরকার করে দিছে। আমি মাছের ঘেরের ব্যবসা করি এখান থেকে সরকারকে রেভিনিউ দেয় তাই সরকার করে দিছে। তবে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে সুপারশি করেন। পাশাপাশি ম্যানেজ করার চেষ্টাও করেন।
নড়াইল সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোসাঃ মেহেরুননেছার কাছে সেতু নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার প্রশ্ন সেখাতে চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তিনি যা পারেন তাই লিখে দিতে বলেন। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রচার না করার জন্য সুপারিশ করেন।
জেলা ত্রান ও পূনবাস কর্মকর্তা মো:জিসান আলী বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(আরএম/এসপি/মার্চ ১০, ২০২৫)