আঞ্চলিক প্রতিনধি, বরিশাল : তিন সন্তানের জননী সিমা বেগম (৪৫)। স্বামীকে হারিয়েছেন সাত বছর আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর বাড়িতে বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালাতেন। বর্তমানে নানা অসুখ বাসা বেঁধেছে স্বামী হারা গৃহবধূ সিমার শরীরে। তাই ঝিয়ের কাজেও ঠিকমতো যেতে পারছেন না।

ফলে দুই শিশু সন্তান নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে চরম মানববেতর জীবনযাপন করছেন গৃহবধু সিমা বেগম। এ যেন এ যুগের আসমানী। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের পূর্ব শরিফাবাদ গ্রামের। বিধবা সিমা বেগম ওই গ্রামের মৃত দেলোয়ার সিকদারের স্ত্রী। সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বামীর রেখে যাওয়া বাঁশের খুটি আর টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি ঘরের সামনের বেড়া দেওয়া হয়েছে পুরাতন কাপড় ঝুলিয়ে। অর্থ সংকটে দীর্ঘদিন যাবত মেরামত না করায় সেই বসত ঘরটিও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। একটু ঝড়-বৃষ্টিতে ঘরটি পুরোপুরি ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। সেই জরাজীর্ণ ঘরেই এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন বিধবা সিমা বেগম।

কান্নাজড়িত কন্ঠে বিধবা সিমা বেগম বলেন, দিনমজুর স্বামী মৃত্যুকালে জরাজীর্ণ ঘরটি ছাড়া অর্থ-সম্পদ কিছুই রেখে যেতে পারেননি। বাবার বাড়ির অবস্থা অস্বচ্ছল হওয়ায় পাড়া প্রতিবেশীদের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালিয়েছি। ঝিয়ের কাজ করেই বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে নানা অসুখ শরীরে বাসা বাধার কারণে ঝিয়ের কাজেও যেতে পারছিনা। এ অবস্থায় একমুঠো খাবার যোগার করতে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হচ্ছে। সেখানে জরাজীর্ণ ঘরটি মেরামতের কোন উপায় নেই।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার ছোট মেয়ে সপ্তম শ্রেনীতে ও একমাত্র ছেলে দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়াশুনা করছে। চরম অর্থ সংকটের কারণে তাদের পড়াশুনাও বন্ধ হওয়ার পথে। তাই তিনি (বিধবা সিমা বেগম) জরাজীর্ণ বসতঘর উত্তোলণ কিংবা সংস্কার ও সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য সমাজের বিত্তবান এবং প্রবাসীদের কাছে হাত পেতেছেন।

এ ব্যাপারে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিধবা সিমা বেগমের জন্য ভাতার ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সময়ে সরকারি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তার বসতঘরের অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এই অসহায় পরিবারটির পাশে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি।

(টিবি/এসপি/মার্চ ১৩, ২০২৫)