স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় : বাংলা নববর্ষ ১৪৩২বঙ্গাব্দ উপলক্ষে  বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত পঞ্চগড়ে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী লোকনাট্য উৎসবের দ্বিতীয় রজনীতে পরিবেশিত হয়েছে হরিগুরু সম্প্রদায়, আটোয়ারীর  ধামের গান  ‘বাবার শেষ বিয়ে’ গয়া প্রসাদ পরিচালিত পালার শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন নারী চরিত্রে অপু (২২), বিবেক (২০), তরুণ (১৮) ও দুলাল (২৮)। পুরুষ চরিত্রে শৈলেন, বিমল,উত্তম, সুবেশ, কাজল ও দেবেন।

বাদ্যযন্ত্রে ছিলেন ফ্লুট বাঁশিতে মাধব, ক্যাচিওতে বঙ্কিম ও দেবেন,বাংলা ঢোলে সাগর এবং জিপসিতে ভোলানাথ।।বাবার শেষ বিয়ের কাহিনী অপূর্ব!' ৪সন্তানের এক বাবার বউ মারা যায়,বৃদ্ধ বাবার ছেলের বউরা শ্বশুরকে ঠিকঠাক দেখভাল করা তো দূরের কথা প্রয়োজনীয় খাবার দাবারও দেয় না।এমন অবস্থায় বৃদ্ধ বাবা সিদ্ধান্ত নেন, সে বিবাহ করবে।কিন্তু তার সন্তান এবং সন্তানের বউরা তাকে বিয়ে দিতে রাজী নয়। কারণ ওয়ারিশ বাড়বে বলে।কিন্তু নাছোড়বান্দা বাবা বিয়ে সে করবেই; কারণ দুঃসময়ে তার দেখভালের প্রয়োজন রয়েছে। এবার সন্তানরা রাজী হলো,তবে কোন যুবতী মেয়ে নয়,বৃদ্ধা যাতে তার গর্বে কোন সন্তান না আসে। বিয়ে হলো। কিন্তু এখানেই ঘটনা শেষ নয়, বাবার চার ছেলের মধ্যে এক ছেলে অবিবাহিত। একটু হাবাগোবা এই ছেলেকে বিয়ে দেয়নি বাবা এবং ভাইয়েরা। তবে এই ছেলেকে বিয়ে দেবার লোভ দিয়ে তাকে কঠিন কঠিন কাজ করিয়ে চলছে। এবার হাবাগোবা এই ছেলে তার সৎমায়েরা সাথে পরকীয়ার করে। গর্বে আসে সন্তান। এই ধরনের কাহিনী নিয়েই নির্মিত 'বাবার শেষ বিয়ে' ধামের গান। 'পঞ্চগড়ের আটোয়ারি অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় সাথে মিশ্রণ ঘটেছে পাশের দেশ ভারতের উত্তর দিনাজপুরের ভাষার।

উপজেলার ১নং ধাক্কামারা ইউনিয়নের লাঠুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দিনের পালার সঞ্চালন করেন দিশারি নাট্যগোষ্ঠীর কর্ণধার মোঃ রফিকুল ইসলাম সরকার। বাদ এশায় স্কুল মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ, ঠাসাঠাসি, গাদাগাদি দর্শক আঙ্গিনা, চলছে অভিনয়, নাচ-গান।কখনও হাসি,কখনও কান্না। শ্রোতা-দর্শকরা প্রাণ উজাড় করে উপভোগ করে। তবে আক্ষেপ ধমনী গ্রামের দর্শক নুরুল ইসলাম (৭৩)এর, এত তাড়াতাড়ি গান শুরু করায় সে আসতে পারছে না ঠিক সময়ে, কারণ তাকে আসতে হচ্ছে কাজ শেষে। একই কথা জানালো অটোরিকশা চালক জাকির (২৫) কাজী পাড়ার হোসেন আলীর।

গত ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় এই উৎসবের উদ্বোধন করেন পঞ্চগড় জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম ইমাম রাজী টুলু। সমাপনী দিবস ২৫ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিবেশিত হবে ফকির সমে আলী সম্প্রদায়ের সত্যপীরের গান ‘বাহরাম বাদশা’।

(এআর/এএস/এপ্রিল ২৪, ২০২৫)