কোটি টাকা মূল্যের খাস জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিল ইউপি চেয়ারম্যান
-(13).jpg)
বিশেষ প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে সরকারী খাস জমি দখলের মহোৎসব শুরু হয়েছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও থেমে থাকছে না দখল কার্যক্রম। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও প্রভাবশালীরা থাকছে ধরাছোয়ার বাইরে। এবার বাৎসরিক ৩ হাজার টাকা লীজ প্রদানকৃত জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন সাবেক রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের পুত্র পরিচয়দানকারী নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বাদশা আলমগীর। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজারে মোঃ শামীম হোসেন ইউনিয়ন পরিষদের জায়গায় পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বালিয়াকান্দির সোনাপুর বাজারের মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ইউনিয়ন পরিষদের খাস জমি। এখানে আগে ছিল ছোট খাল। জমিটি মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন হওয়ায় বিদ্যালয়টির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জমিটিতে কাজ করছে কয়েকজন রাজমিস্ত্রি। তারা বলেন শামীম কাজ করতে বলেছে, তাই কাজ করছি। কোন কথা থাকলে তার সাথে করেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন বলেন, ৩ হাজার টাকায় বাৎসরিক লীজ নিয়ে কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল চলছে। এক বছরের জন্য লীজ নিয়ে কি পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা যায়। এ জমি আর ইউনিয়ন পরিষদ ফেরত পাবে না। লোক দেখানো ৩ হাজার নিলেও চেয়ারম্যান মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে জমি দখলের সুযোগ দিয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত পুর্বক আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীরের বিচার দাবী এবং হওয়ার কারণে সাধার মানুষের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, শুধু এ জমিই নয়, সোনাপুর কাঁচা বাজার সংলগ্ন ডাস্টবিনের জায়গা দখল, সোনাপুর মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজের সামনে জায়গা দখল করে বিএনপির আঞ্চলিক কার্যালয়ের সাইন বোর্ড টাঙানো হয়েছে। একের পর এক জায়গা দখল করছে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায়। এ কারণে প্রশাসনও ব্যবস্থা নিতে হিমসীম খাচ্ছে।
ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শামীম রেজার লীজের কাগজে গত ২১ এপ্রিল সোনাপুর মৌজার খাস জমির দাগ নং ৯৮০ দাগের অংশ ১৪৩২ হইতে ১৪৩৩ সাল পর্যন্ত বন্দোবস্ত ৩ হাজার টাকায় দেওয়া হলো উল্লেখ থাকলেও কত শতাংশ জমি লীজ দেওয়া হলো সেখানে উল্লেখ নেই। আর আদায়কারী হিসেবে চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর নিজেই স্বাক্ষর করেছেন।
এ বিষয়ে নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বাদশা আলমগীর বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের খাস জমি বাৎসরিক ৩ হাজার টাকায় লীজ প্রদান করা হয়েছে। তবে, পাকা স্থাপনা কিভাবে নির্মাণ করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এহসানুল হক শিপন বলেন, জায়গাটি ইউনিয়ন পরিষদের। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সাথে আলাপ করুন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, জমিটি বাজারের নয়, এটা ইউনিয়ন পরিষদের জমি। সহকারী কমিশনার (ভুমি) কাগজপত্র দেখেছে। শামীম রেজা নামে একজনকে বাৎসরিক লীজ প্রদান করেছে। লীজের জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করার কোন সুযোগ নেই। চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।
(একে/এসপি/এপ্রিল ২৬, ২০২৫)