ভারত শীঘ্রই আঘাত হানছে?

শিতাংশু গুহ
ভারত হয়তো খুব শিগগিরিই পাকিস্তানের বুকে আঘাত হানছে, সেটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা অন্য কিছু তা স্পষ্ট নয়, তবে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ হচ্ছেনা বলেই মনে হয়। এ প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা ড: মোহাম্মদ ইউনুস সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেয়াটা আত্মঘাতী। প্রস্তুতি নিতে হলে আধাআধি নয়, পরাজয়ের জায়গা নেই’। এরআগে ২৯ এপ্রিল ডিএমআই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সেলিম আজাদ-র সাথে সেনা সদর দফতরে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন পাকিস্তান হাইকমিশনের ডিফেন্স এট্যাচে ব্রিগেডিয়ার মুহাম্মদ ইমরান ইউসুফ চৌধুরী। তাদের মধ্যেকার সৌজন্য সাক্ষাৎ ৫২ মিনিট চলে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধংদেহী মনোভাবের মাঝে এ বৈঠক গুরুত্ববহ। আগেই বলেছিলাম যুদ্ধ বাধলে পাকিস্তান এর হারিয়ে যাওয়া ‘ছোটভাই’ বাংলাদেশকে পাশে চাইতে পারে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে পাকিস্তানের সখ্যতা সবার জানা, ভারতের সাথে বৈরিতা এবং চীনকে কাছে টানার চেষ্টাও স্পষ্ট।
বাইডেন প্রশাসনের হাত ধরে ড: ইউনুস ক্ষমতায় আসেন। ট্রাম্প এলে পরিস্থিতি কিছুটা ঘোলা হয়, কিন্তু এ সময়ে সেটি হয়তো একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে। ট্রাম্প ঝানু ব্যবসায়ী, তিনি দেয়া-নেয়া রাজনীতিতে বিশ্বাসী, তিনি এটিও জানেন ড: ইউনুস ক্ষমতা ধরে রাখতে চান, ট্রাম্প হয়তো বেচারা ইউনূসের জন্যে কিছুটা সহানুভূতিশীল হতেও পারেন। মোহাম্মদ ইউনুস আল-জাজিরাকে স্পষ্টই বলেছেন যে, জনগণ তাদের আরো দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় দেখতে চায়। প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি কিভাবে ক্ষমতায় থাকবেন? প্রভুদের খুশি করে? বিদেশিরা সেই সুযোগ নিচ্ছে? একটি অনির্বাচিত সরকার যেকোন জাতির জন্যে বিপজ্জ্বনক, কারণ সিদ্ধান্ত নেন ব্যক্তি, সমষ্টি নয়। ড: ইউনুস যেভাবে সবাইকে সবকিছু দিয়ে দিচ্ছেন তাতে মনে হয় দেশটি তাঁর ‘বাবার’। শোনা যায়, জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টিনিও গুতেরাস সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরকালে ড: ইউনূসের পিঠে হাত চাপড়িয়ে দিয়েছেন।
বৃদ্ধ বয়সে ড: ইউনূসের ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসেছে। তিনি দীর্ঘায়ু হোন, যাতে তিনি ক্ষমতায় থাকতে না পারলেও এবং বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে হলেও পরবর্তী জাতিসংঘ মহাসচিব হতে পারেন। দেশের এই মহান ‘আন্তর্জাতিক প্লেয়ার’ যেভাবে ‘অফেন্সিফ’ খেলছেন, তাতে না দেশের বারোটা বেজে যায়। সদ্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন যে, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত রাষ্ট্রবহির্ভুত শক্তির হাতে চলে গেছে’। তিনি ভারত-পাকিস্তান সংকটে মধ্যস্থতা করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। ‘মানবিক করিডোর’ দিতে বাংলাদেশ রাজি, এ সংবাদও তিনিই জাতিকে দিয়েছেন। ক’দিন আগে পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেছিলেন যে, বাংলাদেশকে এর মানচিত্র নূতনভাবে আকঁতে হতে পারে’। পরিবেশ এঙ্গেল থেকে একথা বললেও তিনি মূলত: মৌলবাদী শক্তিকে উৎসাহিত করতে চেয়েছেন, যদি উল্টোটা ঘটে তাহলে বলবেন, ‘আমি তো আগেই বলেছিলাম’। যাহোক, দেশের অবস্থা ভাল নয়, দেশকে যুদ্ধে জড়িয়ে হলেও ড: ইউনুসকে ক্ষমতায় থাকতে হবে বটে?
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।