স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা কোথায় পালিয়ে আছে? পার্শবর্তী দেশে। কিন্তু কোথায় আছে? সে কথা ওখানকার প্রধানমন্ত্রীও বলে না, আর কেউও বলে না। শেখ হাসিনা হয়ে গেছে ওসামা বিন লাদেনের খালাত বোন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল নগরের সদর রোডের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। 

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ওসামা বিন লাদেন কোন গুহায়, কোন পাহাড়ে থাকতো কেউ যেমন জানে না, মাঝে মাঝে ভিডিও বার্তা দিত। ঠিক সেইভাবে শেখ হাসিনা এখন লাদেনের খালাতো বোন হয়ে ভিডিও বার্তা দেন। উনার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, যে ঘটনায় উনি বলেছেন ২২৭টি হত্যা নিশ্চিত হল। ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা যার ফ্যাক্ট চেকিং করেছে, ফরেনসিক করে দেখেছে এটা সত্য এবং শেখ হাসিনার বক্তব্য।

তিনি আরও বলেন, যিনি কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি কীভাবে বলতে পারেন যারা তার নামে মামলা দিয়েছে সেই ২২৭ জনের হত্যা নিশ্চিত হলো। তিনি হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। আপনি এত শিশু, কিশোর, শ্রমিক, রিকশাওয়লার রক্ত পান করার পরও আপনার তৃষ্ণা মেটেনি। এত হত্যা, গুম, খুনের পরে আপনার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় আপনি তাদের জীবন কেড়ে নিতে চাইছেন।

আওয়ামী লীগের আমলে সিন্ডিকেট ছিল উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে হলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনেক টাকা গুনতে হতো। এর মধ্যে ছিল মাসুদ, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালসহ আরও অনেক লোক। এই সিন্ডিকেটের কারণে শ্রমিকদের কষ্ট হতো। শ্রমিকরা ঘর-জমি বিক্রি করে ওই সিন্ডিকেটকে টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া গিয়েও চাকরি পেত না।

তিনি বলেন, আজ তো সিন্ডিকেট থাকার কথা নয়, আজ কেন শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করবে। কেন আজ তারা অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন কাটাবে? আজ তো ফ্যাসিবাদ নেই, আজ তো সেই জুলুম নেই, তাহলে কেন আজ শ্রমিক ছাঁটাই হবে?

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার দোসরদের পাপের বিচার হোক, কিন্তু তাদের মিল-কলকারখানা বন্ধ না করে প্রশাসক নিয়োগ করে সেগুলো সচল রাখুন। কোনো শ্রমিকের চাকরি যেন না যায়, কোনো শ্রমিক তার কর্মসংস্থান না হারায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, পোশাক শিল্পে ন্যূনতম মজুরির জন্য আন্দোলনে শেখ হাসিনার পেটুয়া বাহিনী, শেখ হাসিনার র‌্যাব, শেখ হাসিনার পুলিশ গুলি চালিয়েছে। তারা গুলি চালিয়ে মহিলা শ্রমিক আঞ্জুমান আরা খাতুনকে হত্যা করেছে। শ্রমিক জালাল উদ্দিনকে হত্যা করলো, শ্রমিক রাসেলকে হত্যা করলো।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার গুলিতে শুধু ছাত্র নয়, শুধু জনতা নয়, শ্রমিকদেরও রক্ত গেছে। সেই রক্তে রচিত হয়েছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের সেই মহাবিপ্লব। যে আন্দোলনের শতাধিক শ্রমিক শহিদ হয়েছে।

মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ফয়েজ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কুদ্দুসুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন, ওবায়দুল হক চান, আবু নাসের মহম্মদ রহমাতুল্লাহ, মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, জেলা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার, জেলা সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

(ওএস/এসপি/মে ০১, ২০২৫)