রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার সকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্মরত সেবিকা ফরিদা খাতুন ও সোহানা পারভিন জানান, সদর উপজেলার মাগুরা গ্রামের আক্কেল আলী (২৫) নামের এক যুবক মারপিটের কারণে আজ শনিবার সকালে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে ১ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের সুপারিশ করা হয়। এরপরপরই ১নং ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে না পেয়ে রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে তারা ফের জরুরী বিভাগে ফিরে এসে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাদেরকে মারপিট করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মী জানান, স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে বচসার একপর্যায়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন দুর্বৃত্ত জরুরী বিভাগের আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী ভাঙচুর করে। এ সময় জরুরী বিভাগে দায়িত্ব পালনকারি ঢাকা থেকে আগত ডাঃ তানভির আহম্মেদ ও সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্বে থাকা ডাঃ মারুফ আক্তার, সেবিকা সোহানা পারভিন, সেবিকা ফরিদা খাতুন, স্বাস্থ্য কর্মী ফরিদ হোসেন ও মামুনকে পিটিয়ে জখম করা হয়।

হামলার সময় হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরী বিভাগে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়ে দেন। খবর পয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় আহত নার্স ফরিদা খাতুন কারো নাম উল্লেখ না করে রোগী শাহিনের লাকজন হামলা চালিয়েছে উল্লেখ করে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফয়সাল আহমেদ বলেন, রোগীর চিকিৎসা নিয়ে জরুরী বিভাগে হামলা চালানো হয়েছে। এতে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে জরুরী বিভাগে সেবা দেওয়ার মতো পরিবেশ নেই। রোগীর ১০/১৫ জন লোকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।”

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মানিক বলেন, তিনি রোগীর সাথে ছিলেন। কারা ভাংচুর করেছে তা তিনি জানেন না।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন- ডাক্তার আব্দুস সালাম বলেন, ১ নং ওয়ার্ডে রোগীর জন্য ডাক্তার না পাওয়ার অভিযোগে জরুরী বিভাগে রোগীর লোকজন ভাঙচুর চালিয়েছে। পিটিয়ে জখম করা হয়েছে ঢাকা থেকে আগত এক চিকিৎসক ও স্টাফদের। থানায় মামলা দেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শামিনুল হক জানান, সদর হাসপাতালের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরকে/এসপি/মে ০৩, ২০২৫)