তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ইমদাদুল হক ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হামলা, লুটপাট ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা  সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।

আজ রবিবার দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলার উত্তর ধানকোড়া গ্রামের বটতলায় অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. নুরুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ওই গ্রামের সাবেক ব্যাংক কর্মচারী বাচ্চু মিয়া ১৬ বছর আগে ভাগ্নি জামাই ও প্রতিবেশি ইবাদ শেখের কাছ থেকে একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু তাদের বসবাস করার মতো জায়গা-জমি না থাকায় মানবিক কারণে ওই জমিতে বসবাস করতে দেন। সম্প্রতি জমি বুঝিয়ে ও ছেড়ে দিতে বললে উল্টো টাকা দাবি করে হত্যার হুমকিসহ নানা ভয়ভীতি দেখান। তিনি দিতে অস্বীকার করায় গত ২৯ এপ্রিল রাতইল ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব এমদাদুল হকের নেতৃত্বে তার উপর হামলা চালানো হয়।

তিনি আরো বলেন, গত ২৯ এপ্রিল উত্তর ধানকোড়া গ্রামের মামুন সরদারকে সালিশ থেকে বাড়ি ফেরার পথে লোকজন নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আখের শেখের ঘের দখল করে মাছ লুটের চেষ্টা করে। মোস্তফা শেখের সাথে তার আপন ভাইয়ের বিরোধ চলছিল। বিএনপি নেতা এমদাদুল হক অপর ভাইয়ের পক্ষ হয়ে লোকজন নিয়ে তাকে মারধর করে এবং মুখের দাঁড়ি টেঁনে ছিড়ে ফেলে ওই বিএনপি নেতা।

এছাড়া তিনি পোস্টার ছেড়ার অভিযোগ এনে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন। কাশিয়ানী থানার সদ্য বিদায়ী ওসি শফিউদ্দিনের যোগসাজসে এলকার লোকজনকে হত্যা মামলার আসামি করার হুমকি দিয়ে হয়রানী করা হয়। এছাড়াও ওই বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে ইতনা খেয়াঘাট দখল ও পরানপুর পশুর হাট থেকে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ আনেন ভুক্তভোগীরা।

এছাড়াও তিনি আরও বলেন, বিল্লাল শেখ নামে এক ব্যক্তি ইমদাদুল হকের কাছে পাটের পাওনা টাকা চাওয়ায় তাকে বেধড়ক মারপিট করে। পাটের পাওনা টাকা চাওয়ায় পাশ্ববর্তী পারকরফা গ্রামের সোহান শেখ, পাথরঘাটা গ্রামের খানজাহানকেও বেধড়ক মারপিট করে আহত করে। তাদেরকে হত্যা মামলার ভয় দেখানো হয়।

বিএনপি নেতা এমদাদুল হক ও তার বাহিনীর চাঁদাবাজি, হামলা, লুটপাট ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। দ্রুত তদন্ত করে ওই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

এ সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মো. মামুন সরদার, নুরুল ইসলাম, মোস্তাফা শেখ, মো. আমির আলী খানসহ এলাকাবাসী এবং গণামধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাতইল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব এমদাদুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘বাচ্চু মিয়া ৩ বছর আগে তার আপন ভাগ্নি রহিমার কাছ থেকে ৩ লাখ নিয়ে ৮.৫৬ শতাংশ জমি দলিল করে দিতে চান। বিষয়টি তখন ৩শ’ টাকার স্ট্যাম্পে লিখে দেন বাচ্চু মিয়া। রহিমাকে জমি লিখে না দিয়ে ঘুরাতে থাকেন তিনি। এ নিয়ে গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে আমরা একটি সালিশ বৈঠক করি। সেখানে বাচ্চু মিয়াকে জমি লিখে দিতে বাধ্য করেন সালিশ বৈঠকের লোকজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি মো. নুরুল ইসলামকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।’

(টিবি/এসপি/মে ০৪, ২০২৫)