সড়ক সংস্কারে নয়ছয়

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : চলছে সড়ক সংস্কারের কাজ। আর তাতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট, বালি ও খোয়া। কাজ হচ্ছে না সরকারি নিয়ম অনুযায়ী। কোথাও আবার বালুর পরিবর্তে মাটি, নিম্নমানের পুরনো ইটের খোয়া ও তার অবশিষ্ট অংশের ধুলাবালি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের কাজ তদারকিতে উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও স্বজনপ্রীতি থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এভাবেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব সড়কে বালু ফিলিং, মেকাডোমের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় অল্প দিনেই সড়কগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এমন অনিয়ম করে সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার একাধিক সড়কে।
জানা যায়, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে চলমান কাজের মধ্যে উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের আওদা গ্রাম থেকে বগুড়া গ্রাম পর্যন্ত পৌনে ৩ কিলোমিটার সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ঝিনাইদহের স্মার্ট কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটির কার্যাদেশ পেয়েছে। আবার উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রাম থেকে যোগীপাড়া গ্রাম পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৮ লাখ টাকা। যার কার্যাদেশ পেয়েছে ঝিনাইদহের বাংলাদেশ ট্রেডিং অ্যান্ড করপোরেশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে উপজেলার নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের বকশীপুর গ্রাম থেকে বাগুটিয়া গ্রাম পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা। কার্যাদেশ পেয়েছে ঝিনাইদহের লিটন ট্রেডার্স। এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আরও কিছু কাজ চলমান রয়েছে। তবে সড়কগুলোর নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট,বালি,খোয়াসহ অন্যান্য সামগ্রী। রাস্তার এজিংয়ের দুই পাশের ইট সিডিউল অনুযায়ী ব্যবহার করা হচ্ছে না। আবার রোলার না করেই ইচ্ছামত বালু,খোয়া ফেলা হচ্ছে। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই নির্মাণাধীন সড়কটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আওদা গ্রামের বাসিন্দা আকমল হোসেন বলে, ‘কাজ খুবই নিম্নমানের হচ্ছে। এভাবে কাজ করার চেয়ে না করায় ভাল। শুধু শুধু সরকারের টাকা নষ্ট হচ্ছে।’
যোগীপাড়া গ্রামের রহিম মোল্লা বলেন, ‘সড়ক সংস্কারে যে ইট ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে তা একদমই নি¤œমানের। বালুর পরিবর্তে মাটি ও নিম্নমানের পুরনো ইটের খোয়াও ব্যবহার করা হয়েছে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্মার্ট কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার নান্নু বলেন, ‘দুই-এক গাড়ি খোয়া নিম্নমানের যেতে পারে, তবে বেশিরভাগ খোয়া ভালো।’
আওদা থেকে বগুড়ার রাস্তার কাজের দায়িত্বে থাকা এসও আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কিছু জায়গায় রোলার না করে বালু-খোয়া ফেলা হয়েছিল,আমরা শোনামাত্রই কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। বর্তমানে কাজ বন্ধ আছে।’
উপজেলা প্রকৌশলী রুহুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি শোনার পর সেখান থেকে নিম্নমানের মালামাল-সামগ্রী সরিয়ে ভালো মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার জন্য স্ব স্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
(এসআই/এসপি/মে ০৬, ২০২৫)