কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না এ.সি. বোস ইনস্টিটিউশন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান অরুণের ওপর বহিরাগত এক যুবক পিয়াসের হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পিয়াস উপজেলার ময়না গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, সোমবার (১৩ মে) দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে প্রধান শিক্ষক নিচে নেমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় পিয়াস নামের ওই বহিরাগত হঠাৎ করে তার ওপর হামলা চালায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এ সময় ঘটনাস্থলে আরও একজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন, যিনি হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র মতে, এনটিআরসিএ-এর তথ্য গোপন করে শরীরচর্চা শিক্ষক পদে মো. জাফর মোল্যা নামের এক ব্যক্তি এ স্কুলে নিয়োগ পান। তার সনদ অনুযায়ী তিনি কেবল মাদ্রাসা ও ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করার যোগ্য হলেও, তিনি মাধ্যমিক পর্যায়ের এই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষক তার কাগজপত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিডি) বরাবর পাঠালে তা বাতিল করে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর থেকেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান বলেন, “জাফর মোল্যার যোগদানের পর থেকেই স্কুলে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি গত ২৪ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে শিক্ষার্থীদের দিয়ে লিখিত অভিযোগও জমা দেওয়া হয়।”

অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক জাফর মোল্যা দাবি করেন, “আমি এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের গাছ, পুরনো ভবন বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মে জড়িত থাকায় আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। এখন তিনি নিজের দায় অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, “প্রাথমিকভাবে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছিলেন, কোনো সমস্যা হয়নি। তবে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। তার বিরুদ্ধে আগে করা অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। হামলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে সেটিও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(কেএফ/এসপি/মে ১৩, ২০২৫)