নারায়ণগঞ্জে এশিয়ান হাইওয়ের পাশে ৩০ কোটি টাকার জমি দখলের অভিযোগ

শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় গাউছিয়া-মদনপুর এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের পাশে, চেংগাইন মৌজায় এক ব্যবসায়ীর প্রায় ৩০ কোটি টাকার জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে, ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত মাহবুব রশিদ জুয়েল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ কারী হলেন উপজেলার চরগোয়ালদি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ।
অভিযোগে জানা যায়, সোনারগাঁয়ের নলাটি এলাকার উল্লিখিত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে মালিকানার অধিকার থাকা সত্ত্বেও, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মাহবুব রশিদ জুয়েল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী বালু ফেলে জমি ভরাটের মাধ্যমে জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। দখলের সময় মালিক পক্ষের কোটি টাকার মালামাল ভাঙচুর ও লুটপাটের পাশাপাশি ২০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী আবদুল হামিদ বলেন, আমি সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ করে কোন সুরাহা না পেয়ে, বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হই।আদালতে দাখিল করা মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। মামলায় জমি দখলের পাশাপাশি জুয়েল বাহিনীর বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি এবং ২০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আদালত নির্দেশ দিলে সোনারগাঁ থানা পুলিশের এসআই সেলিম তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে তদন্তের দায়িত্ব পান।
সরেজমিন তদন্তে গেলে, তার উপস্থিতিতেই দখলদারদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হন অভিযোগকারী আবদুল হামিদ। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, মাহবুব রশিদ জুয়েল দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের জমি দখলের সঙ্গে জড়িত। এর আগেও তার বিরুদ্ধে হাসান কেমিক্যাল, লিপি পেপার মিলসহ একাধিক ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। তার এমন কাজের বিরুদ্ধে বলতে গেলেই হামলার শিকার হতে হয়। আমরা নিজের এলাকাতেই এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। জমি দখল, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার মতো স্পর্শকাতর ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং আদালতের নির্দেশের পরও ভুক্তভোগীকে হেনস্তার অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, আমরা আদালতের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছি। জমির প্রকৃত মালিকানা, দখল সংক্রান্ত অভিযোগ এবং ঘটনাস্থলে সংঘটিত ঘটনার যথাযথ তদন্ত চলছে। কোনো পক্ষ যদি হেনস্তার শিকার হয়ে থাকে, সেটিও তদন্তের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আবদুল হামিদ বলেন, তদন্ত চলমান থাকলেও এখন প্রশ্ন উঠছে-প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা দখলবাজ চক্র ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।
অভিযুক্ত মাহবুব রশিদ জুয়েলের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
(এসবি/এসপি/মে ১৪, ২০২৫)