শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : যুবদল নেতা সেজেছেন ওসি,করছেন শালিস। হাতে ওয়াকিটকি নিয়ে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে জাহির করছেন। এমন অভিযোগের একটি পোস্ট ও ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল। যা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে সেই নেতা বলছেন, তিনি সালিসে ভিকটিমের আত্মীয় হিসেবে গিয়েছিলেন এবং মনের অজান্তেই সামনে থাকা ওয়াকিটকি নানাচাড়া করছিলেন। নিজেকে ওসি পরিচয়ও দেননি। আবার যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটা প্রায় ১ বছর আগের। ভাইরাল হওয়া এ ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপার। আর যার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে তিনি শৈলকুপা পৌর যুবদল নেতা হাসান মাহমুদ পলাশ। সে পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজির উদ্দিন ভল্টার ছেলে।

ভিডিওতে দেখা যায়, থানায় চলছে শালিসি বৈঠক। চারপাশ ঘিরে বসে আছেন অসংখ্য মানুষ। সামনে বসে থাকা চেয়ারে বসে আছেন থানার এক এইআই। আর তার সামনে বসে আছেন যুবদল নেতা হাসান মাহমুদ পলাশ সহ কয়েকজন। সালিসি বৈঠক চলার এক পর্যায়ে তিনি সামনে থাকা একটি ওয়াকিটকি হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখছেন, আর পাশে থাকা ব্যক্তিদের সাথে কথা বলছেন। পাশ থেকে কেউ একজন সেই ভিডিওটি করেছে। সেই ভিডিওটি ‘নয়ন চ্যাটার্জি’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়েছে। আর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- ‘৫ আগস্টের পর থেকে এই পলাশ উপজেলাব্যাপী শালিস ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এছাড়াও সে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে গোপনে ভিডিও ধারন করে রাখে। সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সেসব নারীদের ব্লাকমেইল করে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে। পলাশ ওই সকল অসহায় নারীদের দিয়ে রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে রাখে। বেশকিছু নারীর সাথে পলাশের অনৈতিক কার্যকলাপের ভিডিও রয়েছে বলেও পোস্টে দাবি করা হয়।

এছাড়াও বড় নেতাদের সাথে চলার সুযোগ কাজে লাগিয়ে পলাশ নিজেকে পাওয়ারফুল হিসেবে দাবী করে সকল দপ্তরে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও পলাশ থানায় দালালী করে নিজের পিঠ বাঁচাতো। সেই সাথে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো বলেও পোস্টে উল্লেখ করা হয়।

তবে ভাইরাল হওয়া ভিডিও’র পেছনের কারণ জানিয়েছেন যুবদল নেতা হাসান মাহমুদ পলাশ। তিনি বলেন, ‘ঘটনা ও ভিডিওটি একবছর আগের। যেখানে ভিকটিম ছিলেন আমার আত্মীয়। দীর্ঘসময় নিয়ে চলা শালিসের কোন এক ফাঁকে ভুলবসত সামনের টেবিলে থাকা ওয়াকিটকি নেড়েচড়ে দেখেছি। নিজেকে কোনভাবেই পুলিশ কর্মকতা হিসেবে জাহির করিনি, কারণ সবাই আমার পরিচিত। সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই ভিডিওটি ভুলভাবে উপস্থাপন করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের দৃষি আকর্ষণ করছি।’

ঘটনার বিষয়ে এবং থানায় কোন অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুম খানের ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

ভিডিওটি ভুলভাবে উপস্থাপন করে ছড়িয়ে দেওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ এবং এর সাথে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

(এসআই/এসপি/মে ১৪, ২০২৫)