ঘের কর্মচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গণধর্ষণ, টাকা-সোনার গহনা লুট

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : মাছ ও মুরগির সমন্বিত ঘেরের কর্মচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত ও মুখ বেঁধে রেখে তার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সাতক্ষীরা সদরের পায়রাডাঙা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার বরাতিয়া গ্রামের পাঁচ মাসের অন্তঃস্বতা এক গৃহবধু জানান, তিনি একজন ধর্মান্তরিত নারী। বাপের বাড়ি পার্শ্ববর্তী জৈলতলা গ্রামে। বিয়ে করার পর স্বামীর সঙ্গে তিনি সাতক্ষীরা সদরের পায়রাডাঙা গ্রামের একটি মাছের ও সোনালী মুরগির সমন্বিত ঘেরে বাসা বানিয়ে কর্মচারি হিসেবে দুজনে মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে প্রায় সাত বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন। তার স্বামী ওই মাছের ঘেরের পাহারাদার। ওই ঘেরের মালিকের নাম রবিউল ইসলাম। তিনি সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। স্থানীয় কয়েকজন তাদেরকে বিনা টাকায় মুরগি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে চাপ সৃষ্টি করতো।
অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী আরো জানান, শুক্রবার রাতে তিনি ও তার স্বামী ঘেরের বাসায় শুয়েছিলেন। শুক্রবার দিবাগত রাত দুটোর দিকে চারজনের একদল সন্ত্রাসী হাতে রাম দা নিয়ে তাদের ঘরে ঢোকে। এ সময় তার স্বামীর হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে তারা। এ সময় তারা বাক্সে রাখা তাদের বেতনের ৩৭ হাজার টাকা, ১১ আনা ওজনের এক জোড়া কানের সোনার দুল, ১০ আনা ওজনের একটি সোনার আংটি ও খামারে ব্যবহৃত দুটি দা লুট করে। পরে সন্ত্রাসীরা তাকে রান্না ঘরের দরজা খুলতে বাধ্য করে পালাক্রমে চারজন ধর্ষণ করে। এদের মধ্যে তিনি পায়রাডাঙা গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম, রুহুল আমিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও লুৎফর রহমানের ছেলে আশরাফুল ইসলামকে চিনতে পেরেছেন। চলে যাওয়ার আগে বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়।
সাতক্ষীরা সদরের কাশেমপুরের রবিউল ইসলাম জানান, ঘেরের পাহারাদার ও এলাকাবাসীর মাধ্যমে ফোনে খবর পেয়ে তিনি পাহারাদারের স্ত্রীকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহীনুর চৌধুরী, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক, পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহীনুর চৌধুরী জানান, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তিনি ঘটনান্থল পরিদর্শণ করেছেন। ধর্ষণের কথা ওই নারী ও তার স্বামী তাদেরকে জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(আরকে/এসপি/মে ১৭, ২০২৫)