ওয়ারিশান সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ১

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : মামার বাড়ির ওয়ারিশান সম্পত্তির দ্বন্দের জের ধরে একটি লিচুগাছ কাটাকে কেন্দ্রকরে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম নামের একব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তাঁর বয়স ৩৫ বছর। তিনি ২ সন্তানের বাবা। হামলায় আবুল কালাম নিহত হওয়ায় তার বড় ছেলে ৭ম শ্রেণির ছাত্র হাসাইন ও ২য় ছেলে ৩য় শ্রেণির ছাত্র হোসাইন এতিম হয়ে গেছে। ঘটানাটি ঘটেছে শনিবার রাত ৮ টার দিকে কেন্দুয়া পৌর শহরের আইথর গ্রামে।
জানা যায়, কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণজাত গ্রামের মৃত আব্দুল হেকিমের ছেলে আজিজুলের মামার বাড়ি আইথর গ্রামে। তার মামা খুরশেদ মিয়ার ৩ ছেলে। বড় ছেলে আব্দুল হান্নান ফুফাত ভাই আজিজুল হকের নিকট থেকে ১লাখ টাকার বিনিময়ে ২০ শতাংশ (২ কাটা) ওয়ারিশান ফসলি জমি বন্ধক রাখেন ৪-৫ বছর আগে। এ-জমি আজিজুল বারবার বিক্রি করার চেষ্টাকরে আসছিলেন। কিন্তু জমির সঠিক মূল্য পাচ্ছিলেন না। অনেকেই জানান এ নিয়ে আজিজুলের মনে দিন দিনই ক্ষোভের জন্ম নেয়। কিছুদিন আগে আজিজুল সার্ভেয়ার নিয়ে (আমিন) জমি পরিমান ও সীমানা করতে গেলে বসত বাড়িতেও তার ওয়ারিশ অংশের ২ শতাংশ ভূমি চিহ্নিত হয়। এদিকে আজিজুল ও তার মামাতো ভাইদের কাছ থেকে আবুল কালাম এবং শাহ্ আলম বসত বাড়ি কিনে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। এর মধ্যে আবুল কালামের একটি লিচুগাছ আজিজুলের ২ শতাংশ জমির মধ্যে পরে যায়।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে আজিজুল হক ৩-৪ জনের সহযোগি নিয়ে আইথর গ্রামের যান। সেখানে গিয়ে লিচু গাছটি কেটে ফেলতে আবুল কালামের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। আবুল কালাম ও শাহ্আলম বাড়িতে না থাকায় মেয়ে-ছেলেদের সাথে অনেক তর্কবির্তক হয়। এক পর্যায়ে আজিজুল উত্তেজিত হয়ে তর্কিত লিচুগাছটি কেটে ফেলেন। এরপর ২ পক্ষের লোকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। আজিজুল উত্তেজিত হয়ে আবুল কালামের গোয়াল ঘর বাঁধা দড়ি কেটে গরু ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। প্রত্যক্ষ দর্শিরা জানান আজিজুল তার সঙ্গীয় লোকদের নিয়ে আইথর গ্রামের মোড় বাজার পর্যন্ত গেলে তাদের পথ রোধ করেন কেন্দুয়া বাজার থেকে আসা আবুল কালাম ও শাহ্ আলম। এসময় আজিজুল ও তার সঙ্গীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে অর্তকিতে আবুল কালাম ও শাহ্আলমের উপর হামলা চালায়।
আশংকা জনক অবস্থায় তাদেরকে প্রথমে কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবুল কালামকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। পারিবারিক সূত্রে জানাযায় আবুল কালাম ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২ টার দিকে মারা যান। লাশ ময়না তদন্ত শেষে রোববার সন্ধ্যায় বাড়িতে আনা হয়।
আবুল কালামের বড়ভাই আহত শাহ্ আলম জানান রাত ৯ টার দিকে সেনের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাযার নামাজ শেষে পারিবারি কবর স্থানে দাফন করা হবে। তিনি তার ভাইয়ের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান। এসময় বারবার কন্নায় ভেঙ্গে পরছিল আবুল কালামের বৃদ্ধ মা এবং স্ত্রী ও বড়ছেলে হাসাইন এবং ছোটছেলে হোসাইন। কান্না জড়িত কন্ঠে হাসাইন ও হোসাইন বলছিল আমরা বাবা নাই। এখন আমরার কি হইব।
(এসবিএস/এএস/মে ১৮,২০২৫)